সোমবার, ৬ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » কৃষি ও বাণিজ্য | ছবি গ্যালারী | ঢাকা | শিরোনাম » গ্যাসের দাম সহনীয় রাখার দাবি বিইআরসির
গ্যাসের দাম সহনীয় রাখার দাবি বিইআরসির
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে আরেক দফা বেড়েছে গ্যাসের দাম। প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের গড় দাম ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বাড়িয়ে ১১ টাকা ৯১ পয়সা ঠিক করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। আবাসিক দুই চুলার গ্রাহকদের মাসিক বিল ৯৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবে গ্রাহকদের প্রতি মানবিক ও দাম সহনীয় রাখার দাবি করেছে বিইআরসি।
দ্রব্যমূল্যের যাতাকলে নাভিশ্বাস সাধারণ মানুষের ওপর এবার আরেক বাড়তি বোঝা চেপেছে। ৩ বছরের মাথায় আবারও বেড়েছে গ্রাহক পর্যায়ের গ্যাসের দাম।
গ্যাসের দাম গড়ে ১১৭ শতাংশ বাড়ানোর আবেদন করেছিল বিতরণ কোম্পানিগুলো। এর বিপরীতি গণশুনানিতে বিইআরসির মূল্যায়ন কমিটি গ্যাসের দাম বড়জোর ২০ শতাংশ বাড়তে পারে বলে মতামত দিয়েছিল। তবে অবশেষে গ্রাহক পর্যায়ে গড়ে ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়।
নতুন দামে একজন গ্রাহককে আবাসিকে দুই চুলায় এক হাজার ৮০ টাকা গুণতে হবে, অর্থাৎ প্রতি মাসে গ্রাহকের ওপর বাড়তি চাপলো ১০৫ টাকা। মিটারযুক্ত চুলায় ব্যয় বাড়বে ৪২ দশমিক ৮৬ শতাংশ, প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম দাঁড়াবে ১৮ টাকা। এছাড়া বৃহৎ শিল্পে ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ, মাঝারি শিল্পে ১০ দশমিক ০৯ শতাংশ, বাণিজ্যিক ও ক্যাপটিভ পাওয়ারে ১৬ শতাংশ, বিদ্যুতে ১২ দশমিক ৮১ শতাংশ ও চা শিল্পে দাম বেড়েছে ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ। এরমধ্যে সারের ক্ষেত্রে বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। যার পরিমাণ ২৫৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
কিন্তু এতসবের পরও গ্রাহকদের প্রতি মানবিক ও দাম সহনীয় রাখার দাবি করছে বিইআরসি।
বিইআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবু ফারুক বলেন, আমরা ভোক্তার প্রতি অতিমাত্রায় সহানুভূতিশীল ছিলাম। আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ে ভোক্তার স্বার্থ বিবেচনা করেছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা সার্বিক অর্থনীতি বিবেচনা করেছি।
তবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প গ্রাহকশ্রেণিতে গ্যাসের দাম কমেছে ৩৭ শতাংশ। অপরদিকে গণপরিবহনে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য ঠেকাতে সিএনজিতে থাকবে আগের দামই।
বিইআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, পরিবহন খাতে নৈরাজ্য ঠেকাতে আমরা সিএনজির দাম পরিবর্তন করিনি। আমরা আমাদের দেশের ইতিহাসে দেখেছি, জ্বালানির মূল্য যদি সিএনজির ক্ষেত্রে বা অন্যান্য খাতে বৃদ্ধি পায়, সেটি তারা হঠাৎ করে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। তখন সেটি নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।
বিইআরসির দাবি, উচ্চমূল্যের এলএনজির ব্যয় মেটানো আর পেট্রোবাংলাসহ গ্যাস কোম্পানিগুলোকে টিকিয়ে রাখতেই এই দামবৃদ্ধি। যদিও গ্রাহকের ওপর বাড়তি বোঝা চাপানোর পরও সরকারি কোষাগার থেকে ৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। কিন্তু গ্যাস কোম্পানিগুলোর অনিয়ম-দুর্নীতি-অব্যবস্থাপনা বন্ধে কমিশনের নির্দেশনা কোথায়, ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে ওঠে সে প্রশ্নও।
এর জবাবে আবু ফারুক বলেন, সবগুলোর বিষয়ে আমাদের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা এবং আদেশ রয়েছে। আজ হয়তো পাবেন না, কিন্তু আমরা কাজ করছি সহসা পেয়ে যাবেন।
এদিকে এবার গ্যাসের দাম বাড়ায়, কোথায় গিয়ে ঠেকবে পিঠ, সে প্রশ্ন সাধারণ মানুষের। এ বিষয়ে গৃহিনীরা বলেন, একে তো গ্যাস থাকে না। অপরদিকে গ্যাস বিল আমরা এখন যেটি দিচ্ছি সেটির পরিমাণ অনেক। তারপর আবার গ্যাসের বিল বাড়িয়েছে। এখন এ চাপ তো আমরা সমলাতে পারব না, সবকিছু মিলিয়ে অনেক কষ্ট হয়ে যাবে।
নিত্যপণ্যের বাজারে হিমশিম খাওয়ার মানুষ বলেন, এখন মরার ওপর খাড়ার ঘা বলা চলে। দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, তেলের দাম বেড়েছে, মানুষ কী করে বাঁচবে।
এদিকে ঈদের পর বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর ঘোষণাও আসতে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ৬৬ শতাংশ দাম বাড়ানোর আবেদন করেছে। একই সঙ্গে গ্যাসের নতুন দামের প্রভাবও বিদ্যুতে পড়বে।