সোমবার, ৬ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | জাতীয় | ঢাকা | শিরোনাম » ঋণ ও বিল খেলাপি : বিদ্যমান আইনে সমর্থন বিশেষজ্ঞদের
ঋণ ও বিল খেলাপি : বিদ্যমান আইনে সমর্থন বিশেষজ্ঞদের
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আজ ঋণ ও বিল খেলাপি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অধিকাংশই বলেছেন, ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে এখন যে বিধান রয়েছে তা থাকলেই ভালো হয়। আমরা যেটা প্রস্তাব করেছিলাম- এটাতে উনারা খুব কমফোর্টেবল ফিল করেন না।
আজ (সোমবার) সকালে নির্বাচন ভবনে সিইসি ব্যাংক, সেবা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের শিক্ষকসহ ১৪ জনের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর মধ্যে একজন ছাড়া বাকি ১৩ জন উপস্থিত ছিলেন।
সিইসি বলেন, ভোটে অযোগ্য করতে সিআইবি তালিকাভুক্ত নয়, শুধু মামলা থাকলেই প্রার্থী হতে পারবে না- এমন প্রস্তাবে সায় দেননি ব্যাংকাররা ও সেবা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) তালিকাভুক্ত হলেই খেলাপি হিসেবে ভোটে অযোগ্য থাকবেন। সেক্ষেত্রে বিদ্যমান গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) বিধানই বহাল রাখতে হবে।
ঋণ ও বিল খেলাপিদের ভোটে আটকাতে শুধু মামলাকে প্রধান্য দিতে চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এ প্রেক্ষিতেই এই সংলাপের আয়োজন করে ইসি।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আজ এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অধিকাংশই বলেছেন, ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে এখন যে বিধান রয়েছে তা থাকলেই ভালো হয়। আমরা যেটা প্রস্তাব করেছিলাম- এটাতে উনারা খুব কমফোর্টেবল ফিল করেন না। আরও একটু চিন্তা করে ‘আরপিও সংশোধন করা হবে কি না’ তা পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, আরপিও অনুযায়ী, ঋণ ও বিল খেলাপিরা সংসদ নির্বাচনের ভোটে অযোগ্য। এক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র জমার নির্ধারিত সময়ে পুনতফসিলের সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় সিআইডি প্রতিবেদনে যারা খেলাপি হন তারা আর অংশ নিতে পারেন না। কমিশন প্রস্তাব দিয়েছিল- সিআইবি প্রতিবেদন নয়, শুধু মামলা হলেই তাকে ভোটে অযোগ্য করার বিধান করা যেতে পারে।
সিইসি বলেন, ব্যাংকের ঋণ কিভাবে আদায় করতে হবে তা ব্যাংকের ইন্টারনাল বিষয়, তাদের নির্ধারণ করতে হবে। বিল কিভাবে আদায় হবে তা নির্ধারণ করতে হবে।
সিইসি আরও জানান, বর্তমান বিধানে সত্যিকারের যারা খেলাপি নন তারা অযোগ্য হয়ে পড়তে পারে। ভোটে দাঁড়ানোর অধিকার মৌলিক অধিকার। তাতে কারও অধিকার খর্ব না করার জন্য ভিন্ন চিন্তা করেছে ইসি। আমরা একটা প্রস্তাব করেছিলাম- স্পিরিটটাকে স্পষ্ট করার জন্য। ঋণ ও বিল আদায়ের জন্য যাদের বিরুদ্ধে মামলা থাকবে তাদের আমরা ঋণখেলাপি হিসেবে গণ্য করবো।
তিনি বলেন, গ্যাস-বিদ্যুত-টেলিফোন বিল নিয়ে বাহুল্য মনে হয়েছিল কমিশনের। বিল না দিলে লাইন কেটে দেওয়া যায়। নানা কারণে হয়ত জানেও না বিল খেলাপির তথ্য। আমরা প্রস্তাব করেছিলাম- তাদের বিরুদ্ধে যদি মামলা হয় বিল খেলাপি বলতে চাই। তবে সিআইবি তালিকা বাদ দিয়ে শুধু মামলাতে খেলাপি বলতে সায় নেই ব্যাংকারদের।
সিইসি বলেন, আমরা একটা ড্রাফট করেছিলাম। যারা জেনুইন ডিফল্ডার, সত্যি সত্যি টাকা লুট করার জন্যে যারা ঋণ পরিশোধ করছেন না… (তারা যেন অযোগ্য হন) ব্যাংকাররা বলছেন, যে কোনো খেলাপিই সিরিয়াস ডিফল্ডার। কিন্তু আমরা দেখতে চেয়েছিলাম একটু ভিন্নভাবে।
তিনি জানান, সভায় ব্যাংকাররা আগের বিধানটা কমফোর্টেবল বলছেন- সিআইবি থেকে যে তালিকা সরবরাহ করা হয়, তার ভিত্তিতে খেলাপি নির্ধারিত হয়ে থাকে। মামলা করার বিষয়টি যুক্ত করতে চাইলে তাদের আপত্তি নেই।
পূবালী ব্যাংকের জেনারেল ম্যানজার দেওয়ান রুহুল আহসান বলেন, ব্যাংকের পক্ষ থেকে সিআইবি রিপোর্টকে প্রাধান্য দিতে বলেছি আমরা। সেই সঙ্গে প্রচলিত আইন যদি সংশোধন করতে চায় তাহলে ওই অংশটি (মামলা) যুক্ত করতে পারে। সবার মতামতের নিয়ে প্রয়োজনে আরও পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে কমিশনকে আশ্বস্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মামলা করতে অসুবিধা নেই। মামলা তো করা হয়। সিআইবিতে যাদের নাম থাকবে তাদের ঋণখেলাপি বলতে হবে। মামলা করতে অনেকগুলো ধাপ থাকে। সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।
ইসির প্রস্তাবে ব্যাংকাররা রাজি কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা অবজারভেশন দিয়েছি। সিআইবিতে যা আছে তা থাকবে। মামলার কথা রাখতে চাইলে পাশাপাশি বিদ্যমান বিধানও রাখতে হবে।
ডেসকোর চিফ ইঞ্জিনিয়ার রশিদুর রহমান জানান, বিল খেলাপিদের বিরুদ্ধে মামলা করার বিধানে তাদের সম্মতি নেই। সেক্ষেত্রে বিদ্যমান বিধানই বহাল রাখার পক্ষে তারা মতামত দিয়েছেন। নির্ধারিত সময়ে বিল পরিশোধ না করলেই বিল খেলাপি হয়ে যায় সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি গ্রাহককে জানানো হয়। কিন্তু মামলা করতে গেলে সেবা প্রতিষ্ঠানের নানা ঝুঁকিও রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।