শুক্রবার, ২৭ মে ২০২২
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » ‘থ্যাংক গড’ পশ্চিমারা দেশ ছেড়েছে: পুতিন
‘থ্যাংক গড’ পশ্চিমারা দেশ ছেড়েছে: পুতিন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘থ্যাংক গড’ (ঈশ্বরকে ধন্যবাদ) বেশকিছু পশ্চিমা কোম্পানি দেশ ছেড়েছে। এতে দেশীয় ব্যবসার প্রসার ঘটছে। চাঙা হচ্ছে দেশের অর্থনীতি।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, পশ্চিমা কোম্পানিগুলো দেশ ছাড়ায়, দেশীয় কোম্পানিগুলো সে জায়গা নিতে পারছে। পশ্চিমাদের ছাড়াও রাশিয়া উন্নত প্রযুক্তি ও বিলাসবহুল পণ্য উৎপাদন করতে পারবে।
১৯৯১ সালে সোভিয়েতের পতনের পরে যুক্তরাজ্যকে উপযুক্ত জবাব দিতেই ইউক্রেনে আক্রমণ চালিয়েছে রাশিয়া- এমনটা বলেন পুতিন। পুতিনের মতে এই অভিযান অপমানের শোধ তোলার অভিযান। এদিকে ইউক্রেন বলছে, তাদের যুদ্ধের নাম বেঁচে থাকার লড়াই।
সংকট কেবল রাশিয়া-ইউক্রেনেই চলছে না, ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে মূল্যস্ফীতি, বেড়ে গেছে গম, তেল, সার ও জ্বালানির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম।
সোভিয়েত পতনের পরে ম্যাকডোনাল্ড-কেএফসির মতো যেসব পশ্চিমা কোম্পানি রাশিয়াতে গড়ে তুলেছিল তাদের নিজস্ব ব্যবসায়িক সম্রাজ্য, একে একে সবাই রাশিয়া ছেড়েছে। প্রায় ১০ হাজার নিষেধাজ্ঞার বাণ শরীরে নিয়ে রাশিয়া হয়ে উঠেছে বিশ্বের বৃহৎ নিষেধাজ্ঞাধারী দেশ। তবে দমে যাওয়ার পাত্র নন পুতিন। পশ্চিমারা হাত গুটিয়ে নিলে, দ্বারস্থ হয়েছেন এশীয় দেশগুলোর কাছে।
পুতিন বলেন, ‘আমি পেছনে ফিরে তাকিয়ে যখন দেখি একগাদা পশ্চিমা কোম্পানি দেশ ছেড়েছে, থ্যাংক গড, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই আমি। এসব কোম্পানি চলে যাওয়ায় আমাদের দেশের কোম্পানিগুলো ভালো ব্যবসা করতে পারছে। আমাদের অর্থনীতি সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’
প্রাক্তন সোভিয়েত রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে কথা বলার সময় পুতিন বলেন, ‘আমাদের দেশে মার্সিডিজের মতো বিলাসবহুল গাড়ি পাওয়া যাবে। স্বীকার করছি সেগুলোর দাম একটু বেশি হবে। তবে যারা বিলাসবহুল গাড়ি চালিয়ে অভ্যস্ত, আমার মনে হয় না দাম তাদের জন্য বড় কোনো ব্যাপার।’
পুতিন বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োজন রয়েছে। পশ্চিমারা আমাদের পিষে ফেলতে চাইছে, তবে সেটি আর সম্ভব হচ্ছে না।’
তবে কী উপায়ে পুতিন পশ্চিমা সফটওয়্যার ও অত্যাধুনিক যন্ত্রাংশ ব্যবহার করবে কিংবা বিকল্প খুঁজে বের করবে, সে ব্যাপারে কিছু পরিষ্কার করে বলেননি তিনি।
পশ্চিমাদের দেয়া নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে পুতিন বলেন, ‘ওরা চাচ্ছে আমাদের একঘরে করে দিতে। কিন্ত এসব করতে গিয়ে ওরাই বিপদে পড়ছে। সারা বিশ্বে বেড়ে গেছে মূল্যস্ফীতি, দেখা দিয়েছে খাদ্যসংকট, টান পড়েছে সরবরাহ চেইনে। পশ্চিমাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে না পারলেও আমাদের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে না। এশিয়ার দেশগুলো বিশেষ করে চীন ও ভারতের সহয়তায় আমরা বাজারে আমাদের আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘অস্বীকার করছি না, আমরা কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। বিশেষ করে পরিবহন ও সরবরাহ সংকট আমাদের ভোগাচ্ছে। তবে চিন্তার কিছু নেই। আমরা আবার সবকিছু ঢেলে সাজাব। শুরুতে আমাদের লোকসান হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা শিখে যাব, কী করে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসা যায়।’
এদিকে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমিয়েছে। এ ব্যাপারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মূল্যস্ফীতি স্বাভাবিক হওয়ায় ও অর্থনীতি পুনর্গঠিত হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ন্যাটোর শক্তি বৃদ্ধি ও ইউক্রেনকে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত করার পাঁয়তারা করায়, নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালিয়েছে রাশিয়া; শুরু থেকেই এমনটা বলে আসছেন ভ্লাদিমির পুতিন। তবে পশ্চিমারা বলছেন পুতিনের এসব দাবি ভিত্তিহীন ও কল্পনাপ্রসূত।
সূত্র: রয়টার্স