শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

N2N Online TV
রবিবার, ২২ মে ২০২২
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » ভেনিসের মুরানো গ্লাস হাজার বছর ধরে বিশ্বসেরা!
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » ভেনিসের মুরানো গ্লাস হাজার বছর ধরে বিশ্বসেরা!
২১৫ বার পঠিত
রবিবার, ২২ মে ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ভেনিসের মুরানো গ্লাস হাজার বছর ধরে বিশ্বসেরা!

---

৫ হাজার ৬০০ বছর আগে মিসর ও সিরিয়ায় আবিষ্কার হয় কাচশিল্প। কিন্তু রকমারি ডিজাইনের মাধ্যমে কাচশিল্পকে বিশ্বে ঐতিহ্যগতভাবে তুলে ধরতে সক্ষম হন ভেনিসের কাচশিল্পীরা।

১ হাজার ৬০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী শহর ভেনিস। যুগ যুগ ধরে বিশ্ব ইতিহাসের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ
অবদান রেখেছে এই শহরের সৃষ্টিশীলতা। ভেনিসের অন্যতম আকর্ষণীয় সৃষ্টি হলো মুরানো গ্লাস, যা ভেনেসিয়ান গ্লাস নামে পরিচিত। টানা এক হাজার বছরের অধিক সময় ধরে পৃথিবীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও দামি রকমারি গ্লাসের স্থান করে আছে মুরানো গ্লাস।

প্রায় ৫ হাজার ৬০০ বছর আগে প্রাচীন সিরিয়া ও মিসরে কাচ আবিষ্কার হলেও কাচের ভিন্ন রকমারি ও আকর্ষণীয় ডিজাইন বিশ্বের বুকে প্রথম তুলে ধরেন ভেনিসিয়ান কাচশিল্পীরা। অষ্টম শতাব্দী থেকে ভেনিসে কাচশিল্প গড়ে উঠলেও এর বিকাশ ঘটতে থাকে একাদশ শতাব্দীতে। ভেনিসিয়ান কাচের তৈরি বিভিন্ন শিল্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়লে ছোট্ট দ্বীপ ভেনিসে স্থান সংকুলানে সমস্যা সৃষ্টি হয়। সেই সঙ্গে ১২৯১ সালে কাচের চুল্লি থেকে আগুন লেগে ভেনিসের অধিকাংশ কাচ শিল্পকারখানা পুড়ে যায়। সে সময় রিপাবলিক অব ভেনিস সরকার কাচ তৈরির কারখানা ভেনিস দ্বীপের ১ কিলোমিটার দূরে মুরানো দ্বীপে স্থানান্তর করে। সেই থেকে ভেনিসিয়ান গ্লাসকে দ্বীপের নামানুসারে ডাকা হয় মুরানো গ্লাস।

কাচ দিয়ে যে কত রকম বিলাসী সৌন্দর্য ও রকমারি পণ্য তৈরি করা যায়, তা প্রথম দেখিয়েছেন মুরানো গ্লাস তৈরির শ্রমিকরা। ষোলো শতক পর্যন্ত মুরানো গ্লাস ছিল বিশ্বের কাচ তৈরির প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। পরবর্তী সময়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কাচশিল্পের বিকাশ ঘটলেও ভেনিস থেকে যায় অপ্রতিরোধ্য কাচশিল্পের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে। ১৭৯৭ সালে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ভেনিস দখল করেন। তিনি মুরানো গ্লাস কারখানা বন্ধ করে দেন। এই শিল্পকারখানা ও শ্রমিকদের ফ্রান্সে স্থানান্তর করেন সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট। নেপোলিয়নের পরাজয়ের পর মুরানো গ্লাস তৈরির শ্রমিকরা অধিকাংশ ভেনিস ফিরে এসে আবারও শুরু করেন কাচ তৈরির কারখানা। কিছুটা কঠিন হলেও অল্প সময়ের মধ্যে আবারও ঘুরে দাঁড়ায় মুরানো গ্লাস।

বিশ্বের বিলাসবহুল পাঁচতারকা হোটেল, নামিদামি আবাসিক ভবন কিংবা রাজকীয় প্রাসাদের অধিকাংশ শৌখিন ঝাড়বাতি, আলোকসজ্জা তৈরি হয় মুরানো গ্লাস দিয়ে। যার মূল্য কোটি টাকার বেশি। সেই সঙ্গে কম মূল্যে ঘর সাজানোর ডেকোরেটর পিস, টপ, খাবার পানির গ্লাস, থালাবাটি, বাসনকোসন থেকে নারীদের শত রকমের অর্নামেন্টসহ হাজারও আইটেমের জিনিস তৈরি হয় মুরানো গ্লাস দিয়ে। দাম কিছুটা বেশি হলেও মান ও সৌন্দর্যে অতুলনীয় মুরানো গ্লাস, যা দেখে মুগ্ধ ভেনিস ঘুরতে আসা প্রবাসীরা, সেই সঙ্গে গর্বিত মুরানো গ্লাস তৈরির শ্রমিকরা। পশ্চিমা রমণীদের কাছে স্বর্ণের চেয়ে কম নয় মুরানো গ্লাসের চাহিদা।
নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও এখনো মুরানো গ্লাস তৈরির মান বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে ইতালির এই দ্বীপটি। বিশ্বে মেড ইন ইতালির গর্বিত নাম মুরানো গ্লাস, যা হাজার বছর ধরে ঐতিহ্য বহন করছে বিশ্বময়।



আর্কাইভ