মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০২২
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » মারিউপোলের কারখানা থেকে দুই শতাধিক ইউক্রেনের সেনা উদ্ধার
মারিউপোলের কারখানা থেকে দুই শতাধিক ইউক্রেনের সেনা উদ্ধার
অবশেষে মারিউপোলের স্টিল কারখানা থেকে ইউক্রেনের আহত সেনাদের উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। তাদের রাশিয়া-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী হানা মালিয়ার বলেছেন, এদের মধ্যে ৫৩ জন মারাত্মকভাবে আহত। তিনি আরও বলেন, ২১১ জনকে মানবিক করিডোর ব্যবহার করে ওলেনিভকা শহরে পাঠানো হয়েছে। খবর আল-জাজিরা।
গত সপ্তাহে মারিউপোলের আজভস্তালে স্টিল প্লান্ট থেকে বেসামরিক ব্যক্তিদের উদ্ধার করা হয়েছিল। রেডক্রস এবং জাতিসংঘের উপস্থিতিতে সেই কাজ হয়েছিল। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে জানা গিয়েছিল, ওই কারখানার ভিতর আহত অবস্থায় আটকে আছে বেশ কিছু ইউক্রেনীয় সেনা। যারা দীর্ঘদিন ধরে ওই কারখানাকে ঘাঁটি বানিয়ে রাশিয়ার সেনাদের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল। ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক শনিবার (৭ মে) জানিয়েছিলেন, মারিউপোলের বিধ্বস্তপ্রায় আজভস্তাল ইষ্পাত কারখানা থেকে সব নারী, শিশু ও প্রবীণকে উদ্ধার করা হয়েছে।
যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকেই বিশাল স্টিল কারখানায় আটকা পড়ে কয়েকশ মানুষ। জাতিসংঘের নেতৃত্বে এ উদ্ধার অভিযানের আগে অন্তত ৩০০ জন বেসামরিক লোক আটকে ছিল কারখানাটিতে। কারখানা দখল নিয়ে প্রতিনিয়ত হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী।
হানা মালিয়ার বলেন, রাশিয়ার যেসব সৈন্যদের বন্দী করা হয়েছে তাদের সঙ্গে এই সৈন্যদের বিনিময় করা হবে। অর্থাৎ ইউক্রেন এই আহত সৈন্যদের ফিরে পাবে যখন তারা তাদের কাছে আটক রাশিয়ার সৈন্যদের ছেড়ে দেবে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৭ মে) ভোররাতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলনস্কি তার এক ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন, ইউক্রেনের সৈন্য, গোয়েন্দা বাহিনী, মধ্যস্থতাকারী এবং তাদের সঙ্গে রেড ক্রস ও জাতিসংঘ এই উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেছে। তিনি বলেন ‘ইউক্রেনের এই সব নায়কদের জীবিত অবস্থায় প্রয়োজন।
মালিয়ার বলেন, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী, গোয়েন্দাবাহিনী, ন্যাশনাল গার্ড এবং বর্ডার গার্ড ‘যৌথভাবে আহত সেনাদের উদ্ধারে এই অভিযান পরিচালনা করেছে। তিনি আরও বলেন, তারা তাদের উপর অর্পিত নির্দেশ ও দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করেছে।
সামরিক প্রধান জানিয়েছেন, আজভস্তালের কারখানা থেকে সোমবার ২৬০ জনকে উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে বেশ কিছু সেনার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের সকলকেই রাশিয়ার দখলে থাকা পার্শ্ববর্তী শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাদের হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়েছে। এখনো বেশকিছু সেনা কারখানায় আটকে আছেন বলে জানা গেছে। রাশিয়া জানিয়েছে, তাদেরও উদ্ধার করা হবে শীঘ্রই।
প্রশ্ন উঠছে, উদ্ধার করা হলেও রাশিয়া ওই সেনাদের ইউক্রেনের হাতে তুলে দেবে কি! হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলেও পরবর্তী সময়ে ওই সেনাদের রাশিয়া যুদ্ধবন্দি করতে পারে বলেও কোনো কোনো মহল মনে করছে। তবে রাশিয়া এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য দেয়নি। ইউক্রেনও এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
মারিউপোল শহরের মধ্যে আজভস্তালেই ছিল ইউক্রেনীয় সেনাদের শেষ ঘাঁটি। তারা অস্ত্র, খাদ্য ও রসদের অভাবে চরম দুর্গতিতে ছিল। রাশিয়া তাদের আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানিয়ে আসছিল।