বৃহস্পতিবার, ১২ মে ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | বরিশাল | শিরোনাম » ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে টানা বৃষ্টি, ক্ষতির মুখে রবিশস্য
ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে টানা বৃষ্টি, ক্ষতির মুখে রবিশস্য
ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে চার দিন ধরে পটুয়াখালীতে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে নষ্ট হচ্ছে জমির ফসল। বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মুগডালের ক্ষেত। পাশাপাশি মরিচ এবং চীনাবাদামেরও কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। ফলে লোকসানের মুখে পড়েছেন কৃষকরা। কৃষকদের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণের কাজ চলছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি বিভাগ।
দেশের খাদ্যের সরবরাহ ও পুষ্টি জোগানোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে রবিশস্য। কৃষকের কষ্টার্জিত রবিশস্য দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানিতে বাংলাদেশ বেশ স্বনামের সঙ্গে এগিয়ে চলছিল। কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আর ঘূর্ণিঝড় অশনির কবলে এবার রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবছরের মতো এবারও রবিশস্য বাম্পার ফলন হলেও ঘরে ওঠাতে পারেননি বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
উন্নতমানের বীজ, অনুকূল আবহাওয়া এবং প্রয়োজনীয় সার ও কীটনাশক ব্যবহারে এবার জেলায় মুগডালের ভালো ফলন হয়েছিল। এরই মধ্যে ৫২ শতাংশ ফসল তোলা হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে গত ৮ মে থেকে থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
জেলার বিভিন্ন উপজেলার মুগডাল চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। দেশের চলমান বৈরী আবহাওয়া আর ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে মুগডাল, চীনাবাদাম, মাসকলাই, মরিচসহ অধিকাংশ আবাদি জমির ফসল পানিতে তলানো কিংবা অর্ধডুবন্ত অবস্থায় দেখা যায়।
চিকনিকান্দী ইউনিয়নের মুগডাল চাষি মো. মনির জমাদ্দার, হাসেম ঘরামি, ইদ্রিস প্যাদা, মো. আমির হোসেন প্যাদা মো. হানিফ প্যাদা ও মো. ইউনুচ মিয়া এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হুমায়ুন কবির, গলাচিপা সদর ইউনিয়নের অটল চন্দ্র পাল ও মো. ফরহাদ হোসেন বাবুল জানান, নিয়মানুযায়ী প্রতিবছরই সময়মতো বাদাম, মরিচ ও মুগডাল পাকার শুরুতেই ঘরে তুলতে পেরেছেন। কিন্তু এ বছর দিনমজুর না পাওয়ায় আর বন্যার কারণে তা আর সম্ভব হয়নি, যার ফলে বৃষ্টির পানিতে পাকা মুগডাল ফুলেফেঁপে ফেটে গেছে। বাদাম ও মরিচগাছের গোড়ায় পানি জমার কারণে পচন ধরে নানা ধরনের পোকামাকড় আক্রমণ করে নষ্ট করে ফেলে, যা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এতে খাওয়া বা বাজারজাত করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। ফলে লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হচ্ছে।
মাঠে থাকা পাকা খোসার ভেতরেই ডালে অঙ্কুরোদগম হচ্ছে। এ ছাড়া অনেক ডাল ক্ষেতেই খসে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে কৃষকরা মুগডাল তুলছেন। তবে এরপরও জমিতে থাকা তিন ভাগের এক ভাগ মুগডাল নষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
পটুয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক এ কে এম মহিউদ্দিন বলেন, এ বছর পটুয়াখালী জেলায় ৮৬ হাজার ৪৩১ হেক্টর জমিতে মুগডাল, ৫ হাজার ৭৭৯ হেক্টর জমিতে চীনাবাদাম এবং ৬ হাজার ২৪৯ হেক্টর জমিতে মরিচ আবাদ হয়েছিল। টানা বৃষ্টিতে মুগডালের পাশাপাশি চীনাবাদাম এবং মরিচের ক্ষতি হয়েছে।