বুধবার, ১১ মে ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | ঢাকা | শিরোনাম » ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ থেকে পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত বাংলাদেশ
ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ থেকে পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত বাংলাদেশ
বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ আঘাত হানার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। বুধবার (১১ মে) দুপুর নাগাদ ভারতের অন্ধ্র উপকূলে আঘাতে হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এরইমধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে বেড়েছে বাতাসের গতিবেগ। উত্তাল রয়েছে সাগর। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় অশনি থেকে পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত বাংলাদেশ।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সকাল থেকেই পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর কিছুটা উত্তাল রয়েছে। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে সৈকতে। দমকা বাতাস আর থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাতও হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পায়রাসহ বন্দরসমূহকে দুই নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে জেলেদের। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটেও বিরাজ করছে বৈরি আবহাওয়া। আতঙ্কে উপকূলের বেড়িবাঁধের পাশে আশ্রয় নেওয়া মানুষের নির্ঘুম রাত কেটেছে। গত দুইদিন ধরেই উপকূল জুড়ে বৃষ্টি ও বাতাসের গতিবেগ বেড়ে যাওয়ায় নদীতে মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলার নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে আবহাওয়া অধিদফতরের উপপরিচালক ছানাউল হক জানান, শক্তি হারাচ্ছে অশনি, দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ স্বাক্ষরিত আবহাওয়া অধিদফতরের ১৬ নং বুলেটিনে জানানো হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড় আকারে ভারতের অন্ধ উপকূল ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর অবস্থান করছে। অশনি সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তরপশ্চিম বা উত্তর দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।
বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
এদিকে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জি ২৪ ঘণ্টার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, অশনি অন্ধ্রপ্রদেশের মছিলপত্তনমের প্রায় কাছাকাছি অবস্থান করছে। আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অশনি বাঁক নেবে উত্তর-পূর্ব দিকে। অন্ধ্রপ্রদেশ হয়ে ওড়িশা উপকূল এবং তারপর বাংলার উপকূলের কাছাকাছি সমুদ্র পৃষ্ঠ দিয়ে সমান্তরাল ভাবে এগিয়ে যাবে এ ঘূর্ণিঝড়।
ভারতে বৃহস্পতিবার সকালে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে অশনি। বর্তমানে ঘণ্টায় ৬ কিলোমিটারের থেকে গতিবেগ দ্বিগুণ হয়েছে। এখন ঘণ্টায় ১২ কিলোমিটার গতিতে উপকূলের দিকে এগোচ্ছে অশনি। পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে প্রভাব পড়বে আজ বিকেলে বা সন্ধ্যায়। তবে সেই প্রভাব সীমাবদ্ধ থাকবে। উপকূলে বিক্ষিপ্তভাবে ভারি ও সাধারণ ভাবে মাঝারি বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় মাঝারি থেকে হালকা বৃষ্টি হতে পারে।