বুধবার, ৪ মে ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | ঢাকা | শিরোনাম » ঈদে ছুটি নেই, মানবিকতার টানে হাসপাতালে কর্তব্যরত পুলিশ!
ঈদে ছুটি নেই, মানবিকতার টানে হাসপাতালে কর্তব্যরত পুলিশ!
পরিবার, আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন অনেকেই। তবে কিছু পেশাজীবীর মানুষ রয়েছে যারা ঈদেও পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের সময় দিতে পারে না। এর মধ্যে পুলিশ অন্যতম।
এমনই এক পুলিশ কনস্টেবল লাভলি আক্তার। ঈদের খুশিকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে পেশাদারভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করছেন নেত্রকোনায় আধুনিক সদর হাসপাতালে।
গত ২৮ এপ্রিল রাত থেকে গত ৬ দিন ধরে প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা রোস্টার ডিউটি করছেন লাভলী ছাড়া আরও ৩ জন পুলিশ কনস্টেবল। মানসিক ভারসাম্যহীন উদ্ধারকৃত এক কিশোরীকে নিরাপত্তা দিতে তারা সেখানে কর্মরত রয়েছেন। নার্স সংকট থাকায় ভারসাম্যহীন কিশোরী জন্য বাড়িয়ে দিয়েছেন সেবার হাতও।
সময় সংবাদ অনুসন্ধানে জানা যায়, কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবল লাভলী আক্তারের স্বামীও পুলিশে কর্মরত রয়েছেন। তবে স্বামী ঈদের ছুটি পেলেও লাভলী আক্তার ছুটি পাননি।
তাই স্বামী রঞ্জু মিয়াও ছুটি না নিয়ে জনসেবায় কর্তব্যরত রয়েছেন। সুযোগ করে দিয়েছেন অন্যদের ঈদের ছুটি নেওয়ার।
নেত্রকোনায় আধুনিক সদর হাসপাতালে মানসিক ভারসাম্যহীন উদ্ধারকৃত ওই কিশোরীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে শিশু কল্যাণ বোর্ড মোট চারজন পুলিশ কনস্টেবল দিয়েছেন।
ওই কিশোরীর দেখাশোনা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতেই দায়িত্বরত চারজন কনস্টেবলের কেউই পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করেননি।
এ বিষয়ে পুলিশ কনস্টেবল শিপ্রা সময়কে জানান, দূরের বা কাছের কোনো স্বজনই নেই কিশোরীটির পাশে। তাই আমরাই এখন ওর স্বজন।
সরকারি ছুটির দিনেও নিজেদের এমন দায়িত্বকে তারা বরণ করে নিয়েছে ভালোবেসে। আন্তরিকভাবে সর্বোচ্চ দিয়ে করার চেষ্টা করছেন। মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিজেদের আনন্দ ত্যাগ করতে পারায় এই পেশা নিয়ে তারা গর্বিত।
এদিকে শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভাপতি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বলেন, পুলিশ পাঠিয়ে কিশোরীর মায়ের খোঁজ করা হয়েছে।
নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি তদন্ত করে সোহেল রানা জানান, মেয়েটির বাড়ি পার্শ্ববর্তী জেলা সুনামগঞ্জের মধ্যনগর বলরামপুর।
সচেতন নাগরিক ও নারী নেত্রীসহ শিশু কর্মীরা বলছেন, এই কিশোরী মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ার পাশাপাশি নেশাগ্রস্ত। কীভাবে নেশা জাতীয় দ্রব্যে আসক্ত হলো তার কারণ এখনো জানা যায়নি।
আর্থিক কষ্টে থাকা মায়ের কাছেও নিরাপদ নয় বলে মনে করছেন তারা। তাই সরকারি শোধনাগার বা মানসিক চিকিৎসালয়ে দীর্ঘমেয়াদি সেবার মাধ্যমে কিশোরীটি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে।