শিরোনাম:
ঢাকা, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

N2N Online TV
বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২২
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » ধর্ষণ নিয়ে মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনার মুখে মমতা
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » ধর্ষণ নিয়ে মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনার মুখে মমতা
১৩৪ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ধর্ষণ নিয়ে মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনার মুখে মমতা

---

পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ার হাঁসখালিতে এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও পরে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ‘বিরূপ’ মন্তব্য করায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাটা আদৌ ধর্ষণ কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি। এরপর বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। খবর জি নিউজের।

গত ৪ এপ্রিল নদীয়ার হাঁসখালির গাজনা গ্রামের এক কিশোরীর জন্মদিনে গিয়ে দলবল নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন একই গ্রামের সমরেন্দ্র গয়ালির ছেলে ব্রজ গয়ালি। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে পরের দিন তার মৃত্যু হয়। ব্রজ গয়ালির বাবা সমরেন্দ্র গয়ালি এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ও স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য।

এলাকার নেতা হওয়ায় মৃত্যুর পরপরই ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া ওই কিশোরীর দেহ সৎকার করা হয়। এ ঘটনা যাতে প্রকাশ না পায় সে জন্য কিশোরীর পরিবারকে মামলা না করার হুমকি দেন ধর্ষণকারীর বাবা। পরে ঘটনার চার দিন পর স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চাইল্ড লাইনের সহযোগিতায় হাঁসখালি থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন কিশোরীর বাবা। ঘটনার পর পুলিশ প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তিসহ দুজনকে গ্রেফতার করলেও গা ঢাকা দেন ধর্ষণকারীর বাবা সমরেন্দ্র গয়ালি।

ধর্ষণের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন এলাকায় ওই ধর্ষণকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি ওঠে। কলকাতা হাইকোর্টে এ নিয়ে মামলা করেছেন ৯ নারী আইনজীবী। ধর্ষণের শিকার কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে ওই ঘটনায় সিবিআইয়ের তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) কলকাতা হাইকোর্ট এ ধর্ষণের তদন্তভার অর্পণ করেন সিবিআইয়ের হাতে। আগামী ২ মে মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, ‘যে গল্প সবাই দেখাচ্ছে তা হল নাবালিকাটির মৃত্যু হয়েছে ধর্ষণে। কিন্তু একে কি ধর্ষণ বলবেন? ও প্রেগনেন্ট ছিল নাকি প্রেমের সম্পর্ক (লাভ অ্যাফেয়ার) ছিল? সেই খোঁজ কি নেওয়া হয়েছে? আমি পুলিশকে জিজ্ঞাসা করেছি। ওরা গ্রেফতার করেছে। আমাকে বলা হয়েছে, ছেলেটির সঙ্গে মেয়েটার ভালবাসার সম্পর্ক ছিল।’

মমতা জোর দিয়েই বলেন, ‘লাভ অ্যাফেয়ার্স তো ছিলই। বাড়ির লোকেরা সেটা জানত। পাড়ার লোকেরাও জানত। এখন যদি কোনও ছেলে-মেয়ে কেউ কারও সঙ্গে প্রেম করে, সেটা আমার পক্ষে আটকানো সম্ভব নয়। এটা উত্তরপ্রদেশ নয় যে আমি লাভ জিহাদ নিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করব। যদি কেউ অন্যায় করে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে অ্যাকশন হবে। অ্যাকশন হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে এবং কোনও রং দেখা হচ্ছে না। মনে রাখবেন এটা দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানে হয় না। বাংলায় হয়।’

মমতার এ মন্তব্য নিয়ে বিরোধী শিবিরে সমালোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, ভালবাসার সম্পর্ক থাকুক আর না থাকুক, ধর্ষণ ধর্ষণই এবং তা ঘোর অপরাধ। মুখ্যমন্ত্রী দোষীকে আড়াল করতে চাইছেন।

এদিকে ২০১২ সালে দিল্লিতে গণধর্ষণের শিকার নির্ভয়ার মা আশা দেবী এই ঘটনায় বলেছেন, ‘ধর্ষণ নিয়ে যদি মমতা এমন অসংবেদনশীল মন্তব্য করেন, তাহলে তার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা নেই।’ আশাদেবী আরও বলেন, ‘একজন নারী হয়েও যদি তিনি এই মন্তব্য করেন, তাহলে তার পদের সঙ্গে মানানসই হয় না।’

মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি বলেছেন, ‘খুব দুঃখ লাগছে, একজন নারী মুখ্যমন্ত্রী হয়ে এ কথা বলছেন। আমার লজ্জা লাগছে। বাংলা ছাড়া অন্য কোথাও এই ধরনের ঘটনা ঘটে না। হলে শাস্তি দেওয়া হয়। অথচ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলছেন প্রেগন্যান্ট নাকি লাভ অ্যাফেয়ার্স, এটা শুনেই আমার লজ্জা লাগছে।’



আর্কাইভ