শনিবার, ২১ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | রংপুর | শিরোনাম » প্রধান শিক্ষককে অপদস্থ করায় ৪ পুলিশ সদস্য অবরুদ্ধ
প্রধান শিক্ষককে অপদস্থ করায় ৪ পুলিশ সদস্য অবরুদ্ধ
কুড়িগ্রামের কচাকাটায় এক প্রধান শিক্ষককে অপদস্থ করায় চার পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ জনতা।
শনিবার (২১ আগস্ট) সকাল ১১টায় কুড়িগ্রামের কচাকাটা থানার বলদিয়া ইউনিয়নের বলদিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও থানার ওসি উপস্থিতিতে ঘণ্টা ব্যাপী বৈঠক করে সমঝোতা করা হয়। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে জনতার কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং বিক্ষোভকারীরা জানান, স্থানীয় উপেন্দ্রনাথ বাবু এবং স্থানীয় আব্দুল মালেকের ছেলে খোকনের মাঝে দীর্ঘ দিন থেকে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। শনিবার (২১ আগস্ট) সকালে উপেন্দ্র নাথ তার দখলের জমিতে চাষাবাদ করতে গেলে খোকন তা বন্ধে পুলিশের সহযোগিতা নেন।
এ সময় কচাকাটা থানার এসআই রবিউল ইসলাম, এএসআই মশিউর রহমান দুই কনস্টেবলসহ ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে চাষাবাদ বন্ধ করে দেয় এবং চাষে ব্যবহৃত দুটি পাওয়ার টিলারের হেন্ডেল নিয়ে নেয় পুলিশ। একই সঙ্গে উপেন্দ্রনাথ বাবুকে থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
এদিকে তারা বলদিয়া বাজারে পৌঁছালে বলদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রী স্বপন কুমার সরকার বিষয়টি জানতে চাইলে এসআই রবিউল তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে এবং তাকে অপদস্থ করেন। এ ঘটনায় স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে চার পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ এবং রাস্তায় ড্রাম ফেলে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পরে এ খবর পেয়ে বলদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস ছাত্তার বিএসসি ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
এদিকে কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেনসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমঝোতা করে অবরুদ্ধদের থানায় নিয়ে আসেন।
উপেন্দ্রনাথ জানান, তার দখলের জমিতে চাষাবাদ করতে গেলে খোকনের পক্ষ নিয়ে পুলিশ এসে তা বন্ধ করে দিয়ে চাষ কাজে ব্যবহৃত পাওয়ার টিলারের হেন্ডেল নিয়ে নেন এবং আমাকে তাদের সঙ্গে থানায় যেতে বলে। পথিমধ্যে প্রধান শিক্ষক বিষয়টি জানতে চাইলে তাকে অপদস্থ করেন এসআই রবিউল ইসলাম। এ সময় স্থানীয়া বিক্ষুব্ধ হয়ে তাদেরকে বাজারে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
স্থানীয় মাহামুদ হাসান বলেন, এসআই রবিউল প্রধান শিক্ষকে অপদস্থ করে এবং তার স্কুলে তালা লাগানোর হুমকি দেন। সঙ্গে স্থানীদের ঘুম হারাম করে দেয়ার হুমকি দেন।
অভিযুক্ত এসআই রবিউল ইসলাম জানান, বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের আশংকায় ওসির নির্দেশে এখানে দায়িত্ব পালন করতে আসি। এ সময় জনগণ সিনক্রিয়েট করে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার সরকার বলেন, আমার পরিচয় দিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে এসআই রবিউল ইসলাম আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং উপেন্দ্রনাথের সঙ্গে আমাকেউ থানায় যেতে ধমকান। পরে ওসি এবং স্থানীয়দের উপস্থিতিতে বিষয়টি মিমাংসা হয়। এ সময় পুলিশ তাদের ভুল স্বীকার করেন।
কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) কামাল হোসেন জানান, জমাজমি নিয়ে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে এমন সংবাদ স্থানীয় একজন ফোন করে জানালে চার পুলিশ সদস্যকে সেখানে পাঠানো হয়। সেখানে সামান্য ভুল বোঝাবুঝির কারণে উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে বিষয়টি সমঝোতা করা হয়েছে।