শুক্রবার, ১৮ মার্চ ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | ঢাকা | শিরোনাম » ২৮মার্চ হরতাল ডেকে ২৫তারিখ বিদেশ যাচ্ছেন ডা.জাফরুল্লাহ
২৮মার্চ হরতাল ডেকে ২৫তারিখ বিদেশ যাচ্ছেন ডা.জাফরুল্লাহ
আগামী ২৮ মার্চ অর্ধদিবস হরতালের ডাক দিয়ে ২৫ তারিখ পারিবারিক কাজে যোগ দিতে দেশ ছাড়ছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। দ্রব্যমূল্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত ১১ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে আধা বেলা হরতাল কর্মসূচির আহ্বান করেছিলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য, জনগণের কথা সরকারের কানে প্রবেশের জন্য ২৮ মার্চ সব রাজনৈতিক দলের, সব মানুষের উচিত শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করা।
জানা যায়, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার ছেলের কাছে যাওয়ার পাশাপাশি ব্যক্তিগত কাজের জন্য ২৫ তারিখ লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন। তবে তিনি কবে ফিরে আসবেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পারিবারিক প্রয়োজনে দেশের বাইরে যেতে হচ্ছে। তবে হরতালের কর্মসূচি থাকবে। তিনি না থাকলে হরতালে কোনো প্রভাব পড়বে না বলেও মনে করেন তিনি।
এর আগে, ১১ মার্চ বিকেলে ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের বীর উত্তম মেজর হায়দার মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও গণ-অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নূর।
ওই সময় জুনায়েদ সাকি হরতালে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তবে গণ-অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নূর নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সমর্থনের বিষয়ে জানাবেন বলে জানিয়েছিলেন।
কিন্তু এখনো গণ-অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে সমর্থন জানানো হয়নি বলে সময় নিউজকে নিশ্চিত করেন নুরুল হক নূর। বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমরা নিজেদের কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্যারের সব যৌক্তিক কর্মসূচিতে আমরা তার পাশে ছিলাম, এখনো আছি। তবে হরতাল যেহেতু একটি বড় রাজনৈতিক কর্মসূচি, সেহেতু আমরা দলের মিটিংয়ে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাব।’
অন্যদিকে হরতালে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর না থাকার বিষয়টি নেতিবাচকভাবে দেখতে চান না গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তার মতে, ডা. জাফরুল্লাহ যদি হরতালে না থাকতে পারেন, সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। ওইদিন অন্য সংগঠনগুলোরও হরতাল কর্মসূচি আছে। সাধারণ মানুষও থাকবে। সব মিলিয়ে হরতাল সফল হবে।
যদিও ডা. জাফরুল্লাহর দেশত্যাগের বিষয়টি সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কিছু জানেন না বলেও জানান জোনায়েদ সাকি।
১১ মার্চের সংবাদ সম্মেলনে গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা বলেছিলেন, দেশ কঠিন সময় অতিক্রম করছে। এটা ১৯৭৪ সালের পূর্বাভাস। ১৯৭৪ সালে অনাহারে তিন লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছিল। কয়েক মাস আগেও আমাদের দেশে রাষ্ট্রীয় উদ্বৃত্ত ছিল ৪৭ বিলিয়ন ডলার। এখন সেটা ৪৩ বিলিয়ন ডলারে চলে এসেছে। এই ৪ বিলিয়ন কোথায় গেল? এই ৪ বিলিয়ন ডলার দিয়ে তো কয়েক বছর সারা দেশে দু-তিন কোটি পরিবারকে রেশন দেওয়া যেত।
শ্রমজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আমাদের আধা বেলার জন্য রাস্তায় নামা দরকার। আপনাদের কষ্ট হবে, তারপরও অনুরোধ করছি, আধা বেলা কষ্ট করেন। আপনারা ২৮ তারিখ বাসার বাইরে বের হবেন না। বের হলেও হরতালে যোগ দেওয়ার জন্য বের হবেন। সবাই মিলে দলমত নির্বিশেষে যে যেভাবে পারেন, ২৮ মার্চের হরতাল পালন করেন।’
এ সময় সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, অতীতের মতো হরতালের সময় নিজেরা গাড়ি ভেঙে আমাদের ওপর চাপাবেন না। এই হরতালে প্রধানমন্ত্রীকে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে একই দিন (১১ মার্চ) সকালে গণতান্ত্রিক বাম জোটও ২৮ মার্চ আধা বেলা হরতালের ঘোষণা করে।