বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | ঢাকা | রাজনীতি | শিরোনাম » দেশে পণ্যের সঙ্কট নেই, কৃত্রিম সঙ্কট তৈরির চেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে : তথ্যমন্ত্রী
দেশে পণ্যের সঙ্কট নেই, কৃত্রিম সঙ্কট তৈরির চেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে : তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশে পণ্যের সঙ্কট নেই, কৃত্রিম সঙ্কট তৈরির চেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘দেশে খাদ্যপণ্যের কোন সঙ্কট নেই, যারা কৃত্রিমভাবে খাদ্য পণ্যের সঙ্কট তৈরি করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। অন্যদিকে আমরা দেখতে পাচ্ছি দ্রব্যমূল্যের বিষয়ে বিএনপি মাঠে কর্মসূচি দিয়েছে, আর অসাধু ব্যবসায়ীদের তারা বাতাস দিচ্ছে যাতে করে পণ্যের মূল্যটা বাড়ায়, দেশে যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে।’
মন্ত্রী আজ সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে বই মেলার সমাপনী, মহান একুশে স্মারক সম্মাননা পদক ও সাহিত্য পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ১৯ দিনব্যাপী বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. মুমিনুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন বই মেলা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমদ মঞ্জু।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দেশবিরোধী কাজ করছে, একইসাথে বিএনপিও একই কাজ করছে। বিএনপি আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে অসাধু ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দিচ্ছে পণ্যের মূল্য বাড়ানোর জন্য। আমরা নজর রাখছি। সরকার কিন্তু এই অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ড. হাছান বলেন, ইউরোপ আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলোতে আমরা দেখতে পাই সেখানে কোনো অনুষ্ঠান কিংবা পূজা-পার্বণের আগে পণ্যের মূল্য কমিয়ে দেয়া হয়। রমজান ঈদ পূজা পার্বন আসলে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা দেখা যায় পণ্যমূল্য বাড়ানোর চেষ্টা করে। এটা প্রচন্ড অসততা এবং জনগণের সাথে প্রতারণা। যারা এগুলো করবে তারা জনবিরোধী কাজ করবে। সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতারা বলছেন সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। নয়া পল্টনের অফিসে বসে গত ১৩ বছর ধরেই আমাদের বিদায় ঘণ্টা বাজাচ্ছেন তারা। কিন্তু তাদের ঘণ্টায় মানুষ সাড়া দেয় নাই। ১৩ বছর ধরেই এই বিদায় ঘণ্টার মধ্যেই আছি আমরা। আরো কত বছর তাদের এই বিদায় ঘণ্টা বাজাতে হয় সেটি জনগণ ঠিক করবে। তাদের ঘণ্টা বাজানোর মধ্যেই আগামী নির্বাচনে জনগণ আমাদেরকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিবে। যারা বিভ্রান্তির চেষ্টা চালায়, তাদের চিহ্নিত করুন, তাদের বর্জন করুন।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে বাংলাদেশে এগিয়ে গেছে। আমরা যেহেতু এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি তাই আমরা অনেকেই তা অনুভব করতে পারি না। যে মানুষটি ১২ বছর আগে বিদেশ গেছে মাঝখানে দেশে আসে নাই, তিনি যখন বাংলাদেশে আসেন তখন পরিবর্তনটা লক্ষ্য করেন।
গত মাসের শেষ সপ্তাহে তিনি ভারতের পূর্বাঞ্চলে কয়েকটি রাজ্যে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, বৈঠকে আসামের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, তিনি প্রতিবছর ঢাকায় আসেন ঢাকেশ^রী মন্দিরে। প্রতি বছরই তিনি পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এটি আমাদেরকে প্রচন্ডভাবে উৎসাহিত করছে। আসামের রাজ্যপাল এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীও ঠিক একই কথা বলেছেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সমগ্র পৃথিবী আজকে বাংলাদেশের বদলে যাওয়ার প্রশংসা করছে, কিন্তু বাংলাদেশের কিছু মানুষ প্রশংসা করতে পারে না। বাংলাদেশে একটি দল আছে বিএনপি এবং তাদের মিত্ররা এই উন্নয়ন দেখে না। তারা দেখেও না দেখার ভান করে। মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য আজকে তারা নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে। কর্মসূচির মূল বিষয় হচ্ছে দ্রব্যমূল্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও খাদ্যপণ্যের মূল্য বেড়েছে। বাংলাদেশে কিন্তু কয়েকটি পণ্যের মূল্য বেড়েছে, তবে ইউরোপের চেয়ে অনেক কম বেড়েছে। যেকটি পণ্যের মূল্য বেড়েছে সেগুলো আমদানি-নির্ভর পণ্য আর তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আমাদের সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, মানুষের বই পড়ার অভ্যাস অনেক কমে গেছে। এখন মানুষ আগের মত বই পড়ে না। এর একটি কারণ হচ্ছে, মানুষের অবসর কমে গেছে। মানুষের বই পড়ার জন্য সময়টুকু এখন আগের মত আর নাই। কারণ মানুষ শুধু ছুটছে, মানুষ অর্থের পিছনে ছুটছে আবার অনেকে জীবনযুদ্ধে ছুটছে, মানুষ চিরন্তন ছুটে চলছে।
তিনি বলেন, আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। মানুষ যে অবসর সময়টুকু পায় এখন সেই অবসর সময়টুকু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম মানুষের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু একটি বই মানুষের জীবনে কি পরিবর্তন আনতে পারে এবং মানুষের মননশীলতা বিকাশের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের সুকোমল বৃৃত্তিগুলো বিকশিত করার ক্ষেত্রে, কিংবা জীবনকে পাল্টে দেয়ার ক্ষেত্রেও একটি বই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। শিশু-কিশোরদের মাঝে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা একইসাথে সঠিক বই পড়তে দেয়াও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।