শুক্রবার, ৪ মার্চ ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | জাতীয় | ঢাকা | শিরোনাম » মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অবিশ্বাসীদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না - নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অবিশ্বাসীদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না - নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। স্বাধীন বাংলাদেশে কেউ যেনো দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে না পারে, হত্যার রাজনীতি করতে না পারে সেজন্য সবাইকে তীক্ষ্ন নজর রাখারও আহবান জানান তারা।
শুক্রবার (৪ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধকালীন পত্রিকা ‘সাপ্তাহিক দাবানল’-এর সূবর্ণজয়ন্তী সংখ্যার প্রকাশনা উৎসবে উপস্থিত বক্তারা এই মন্তব্য করেন।
বক্তারা বলেন, ক্ষমতায় থাকবে স্বাধীনতার পক্ষের দল, বিপক্ষেও থাকবে স্বাধীনতার পক্ষের দল। এখানে স্বাধীন দেশে একাত্তরের পরাজিত শক্তিদের ঠাঁই হবে না । হতে দেওয়া হবে না।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের রাজনৈদিক দল নিয়ে একটা বৃহত্তর মোর্চা হোক আমরা এটা চাই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হলে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি আর মাথা চারা দিয়ে উঠতে পারবে না।
তিনি বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। যে নির্বাচনের পক্ষে-বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দলগুলো। সেক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো ঐক্য সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজ যারা বলছেন বাংলাদেশে গণতন্ত্র নাই তারা বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে স্বীকার করে না। যারা আলোয় প্রজ্জ্বালিত এই সত্যকে অস্বীকার করে তাদের মুখ থেকে গণতন্ত্রের সংজ্ঞা শুনতে চাই না। তিনি বলেন, বাংলাদেশে থাকতে হলে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি অবিচল থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সরকারকে মেনে চলতে হবে।
দাবানল পত্রিকাটির চরিত্র ও চেতনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রচুর অপপ্রচার হয়েছে। অপপ্রচারকে রুখে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্য ও স্পিরিট মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে দাবানলের মতো বেশ কয়েকটি পত্রিকা। সেই পত্রিকা আবারও নতুন কলেবরে আসছে সুতরাং অপপ্রচারকারীরা সাবধান। কারণ, আবারও আসছে দাবানল।
দাবানলের প্রতিষ্ঠাতা প্রকাশক ও পৃষ্ঠপোষক জাতীয় নেতা শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর বড় সন্তান প্রয়াত ড. মোহাম্মদ সেলিম প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ড. সেলিম জীবনের বেশিরভাগ সময় বিলেতে কাটিয়েছেন। অনেকে আরাম আয়েশী জীবন ছিলো তার তবুও দেশের কথা দেশের মানুষের কথা ভুলে যাননি তিনি। দেশ ও মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ থেকেই মুক্তিযুদ্ধের সময় একটি পত্রিকার প্রকাশের কথা অনুভব করেছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারের জাতির পিতাকে হত্যার পর স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি আবার মাথাচারা দিয়ে উঠে। সেসসময় জাতির জনকের দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পাশে থেকে এই হত্যার প্রতিবাদে বিশ্ব জনমত তৈরি করা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি তদন্ত কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন মোহাম্মদ সেলিম।
তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা প্রায়শই বলেন রক্ত কথা বলে। আজ জাতীয় নেতা শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর বড় সন্তান প্রয়াত ড. মোহাম্মদ সেলিমের একমাত্র পুত্র মো. শেহেরিন সেলিম রিপন মুক্তিযুদ্ধেও চেতনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে যে ‘দাবানল’ পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন এতে প্রমাণ হয় সত্যি রক্ত কথা বলেন। এসময় তিনি শেহেরিন সেলিম রিপনের এই চিন্তা ও উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের যেসব পত্রিকা মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা যোগাতো এবং মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তথ্য তুলে ধরা হতো তারমধ্যে দাবানল অন্যতম। আমরা সেই দাবানলের নামটিও ভুলে যেতে বসেছিলাম। কারণ, স্বাধীন বাংলাদেশেও স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিরা ঠাঁই করে নিয়েছিলো। ইতিহাসকে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিলো। কিন্তু ইতিহাসকে ধ্বংস করা যায় না ইতিহাসকে ইতিহাসের মতো চলতে দিয়ে হয় এটা তারা জানতো না। এসময় মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান তিনি।
জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। এক পর্যায়ে দাবানলের সূবর্ণজয়ন্তী সংখ্যা মোড়ক উন্মোচন করেন আগত অতিথিবৃন্দ। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবি নির্মলেন্দু গুণের দুটি কবিতা পৃথক পৃথকভাবে আবৃত্তি করেন মাহিদুল ইসলাম ও শিপ্রা রহমান। শহীদ ক্যাপ্টেন এমন মনসুর আলী ফাউন্ডেশনের সভাপতি এবং দাবানল পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মো. শেহেরিন সেলিম রিপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান। এছাড়া মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শহীদ ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলীর বড় সন্তান রেজাউল করিম।