বুধবার, ২ মার্চ ২০২২
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » ইউক্রেনীয়দের জন্য পাসপোর্ট-ভিসা ফ্রি করল যারা
ইউক্রেনীয়দের জন্য পাসপোর্ট-ভিসা ফ্রি করল যারা
ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের ফলে ধারণা করা হচ্ছে ৫০ লাখ ইউক্রেনীয় বাস্তুচ্যুত হবে। এ পরিস্থিতিতে বিশ্বের অনেক দেশ ইউক্রেনের শরণার্থীর জন্য সীমানা উন্মুক্ত করে দিয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো ব্যাপকহারে শরণার্থী গ্রহণ করছে।
ইইউ ও ফ্রান্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুদ্ধাবস্থা অব্যাহত থাকায় প্রায় তিন লাখ ইউক্রেনীয় শরণার্থী ইইউর দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। এ সপ্তাহে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফিসার বলেছেন, ইইউর সব সদস্য ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের নেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
অনেক দেশ ইউক্রেনীয়দের জন্য তাদের বৈদেশিক নীতিমালা ও ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করেছে। দেখে নেওয়া যাক ইউক্রেনীয়দের জন্য কোন দেশ কতটুকু ছাড় দিল-
পোলান্ড
ইউক্রেনে হামলার শুরু থেকেই পোলান্ডে সবচেয়ে বেশি শরণার্থী গ্রহণ করেছে। পোলান্ড সরকার জানিয়েছে, ইউক্রেন থেকে পোলান্ডে যে কেউ প্রবেশ করতে পারবে। লাগবে না কোনো পাসপোর্ট-ভিসা।
রোমানিয়া
ইউক্রেনের নাগরিকদের জন্য মানবিক কারণে রোমানিয়াও তাদের সীমান্ত খুলে দিয়েছে। কেবল বায়োমেট্রিক পদ্ধতি অথবা সাধারণ পাসপোর্টে ইউক্রনীয়রা রোমানিয়ায় ঢুকতে পারবে। এমনকি পরিচিতি ফরম পূরণ, আইডি কার্ড ও জন্ম নিবন্ধণ কার্ড দেখিয়েও রোমানিয়ায় প্রবেশ করা যাবে। এ ছাড়া মানবিক কারণে কোনো প্রকার কাগজপত্র ও নথি ছাড়াও দেশটি ইউক্রেনের নাগরিকদের নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
হাঙ্গেরি
ইউক্রেনের বৈধ সব নাগরিককে স্বাগত জানিয়েছে হাঙ্গেরিও। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ভিকটর ওরবান বলে, আমরা দেখছি অনেকই অভিবাসনের প্রমাণাদি ছাড়া হাঙ্গেরিতে আসছে, আমরাই তাদেরকে কাগজপত্র সরবরাহ করছি। এ ছাড়া তৃতীয় কোনো দেশ থেকে ইউক্রেনীয়রা এলেও তাদের গ্রহণ করা হচ্ছে।
আয়ারল্যান্ড
গত শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) আয়ারল্যান্ড ইউক্রেনীয়দের জন্য তাদের ভিসা তুলে নেয়। আইরিশ বিচার মন্ত্রণালয় জানায়, ইউক্রেনের বর্তমান অবস্থান যে কেউ আয়ারল্যান্ডে প্রবেশ করতে পারবে, সেক্ষেত্রে ভিসা ছাড়াও তাদের প্রবেশাধিকার বৈধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
মলদোভা
মলদোভা সরকারও ইউক্রেনের নাগরিকদের বিনা পাসপোর্টে গ্রহণ করছে। কেবল জাতীয় পরিচয়পত্র দেখাতে পারলে তারা নিজ দেশ প্রবেশে সুযোগ দিচ্ছে ইউক্রেনীয়দের।
স্লোভাকিয়া
অস্থায়ীভাবে শরণার্থী গ্রহণ করছে স্লোভাকিয়াও। দেশটি বিনা বিবেচনায় ইউক্রেনের নাগরিকদের ৯০ দিনের জন্য আশ্রয়ের সুযোগ দিয়েছে।
যুক্তরাজ্য
ইউক্রেনীয়দের জন্য যুক্তরাজ্যও কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করেছে। ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে থাকা যে কোনো আত্মীয়ের কাছে ইউক্রেনীয়রা আসতে পারে। কিন্তু যাদের কোনো আত্মীয় নেই, তাদের প্রবেশ সুযোগ রাখেনি যুক্তরাজ্য।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো বিদেশি যোদ্ধা অংশ নিতে চাইলে সাময়িকভাবে তাদের ভিসা লাগবে না। আগ্রাসী রাশিয়ার নাগরিক ছাড়া যে কেউ ইউক্রেনের আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা বাহিনীতে যোগ দিতে পারবে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অংশ নিতে এখন পর্যন্ত বিদেশ থেকে ৮০ হাজার ইউক্রেনীয় নাগরিক দেশে ফিরেছেন।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইউক্রেনে শুরু হওয়া রুশ হামলায় ১৩ শিশুসহ অন্তত ১৩৬ জন নিহত হয়েছে। তবে ইউক্রেন বলছে, নিহত ব্যক্তির সংখ্যা সাড়ে ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে। যুদ্ধ থেকে প্রাণে বাঁচতে ছয় লাখ ৭৫ হাজারের বেশি মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে যেতে বাধ্য হয়েছে।
এদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ বিষয়ে আগামী সোমবার (৭ মার্চ) গণশুনানি শুরু করবেন হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)।