শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | ঢাকা | শিরোনাম » পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাৎ : ডিজিটাল সেবা ডট কমের মালিক গ্রেপ্তার
পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাৎ : ডিজিটাল সেবা ডট কমের মালিক গ্রেপ্তার
প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ডিজিটাল সেবা ডট কম নামক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. শরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব-২ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি মো. ফজলুল হক জানান, সম্প্রতি বিভিন্ন অনলাইন বিজনেস, ই-কমার্স এবং ডিজিটাল ব্যবসায়িক কারসাজি মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে প্রলোভিত করে প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এক শ্রেণির পেশাদার প্রতারক চক্র।
অতি সম্প্রতি এরূপ প্রতারণার মাধ্যমে অসংখ্য মানুষকে ফাঁদে ফেলে সর্বস্বান্ত করার বেশকিছু অভিযোগ পায় র্যাব-২। সম্প্রতি ই-ভ্যালিসহ বেশ কয়েকটি অনলাইন ব্যবসার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছে র্যাব-২।
এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল শুক্রবার (২৫ ফ্রেব্রুয়ারি) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর একটি দল রাজধানীর কলাবাগান থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় ‘ডিজিটাল সেবা ডট কম’ নামক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. শরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিজ্ঞ আদালতের সাজা পরোয়ানা নং সিআর- ৩৯৮/১৯ (সিরাজ) এবং সিআর ২৮৭/১৯ (সিরাজ) ধানমন্ডি থানায় গ্রেপ্তারের অপেক্ষায় মূলতবি থাকায় সাজা পরোয়ানার ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অন্তত ১২ টি মামলা তদান্তাধীন-বিচারাধীন আছে। গ্রেপ্তার শরিফুল ইসলাম ১৯৯৭ সালে এইচ এস সি পাশ করেন। পরবর্তীতে ২০০০ সালে রংপুরে ক্যান্টমেন্ট এলাকায় একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার চালু করেন। মূলত সেখান থেকে তার ওয়েব ডেভেলপিং কাজে হাতে খড়ি। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে ঢাকায় এসে ওয়েব ডেভেলপারের কাজ শুরু করেন এবং ২০১৫ সাল থেকে ডিজিটাল সেবা ডট কম নামক অনলাইনভিত্তিক সেবা কেনা-বেচা প্রতিষ্ঠান খুলে উদ্যোক্তা সংগ্রহ শুরু করেন। যা পরবর্তীতে ই-উদ্যোক্তা লিমিটেড নামে রূপান্তরিত করেন। যার মাধ্যমে বিভিন্ন ভুক্তভোগীকে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। শরিফুল ইসলাম গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য ঘন-ঘন অবস্থান পরিবর্তন করে রাজধানীতে গা ঢাকা দিয়েছিলেন।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার শরিফুল জানায়, তিনি বিভিন্ন জেলায় লোকাল ম্যানেজার পদে প্রতিনিধি নিয়োগের নামে বিভিন্ন প্রার্থীর নিকট থেকে ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। উদ্যোক্তাদের সঙ্গে লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ ভাগাভাগির চুক্তি থাকলেও তিনি তা ভঙ্গ করেন। তিনি নামে-বেনামে ভূঁইফোঁড় অসংখ্য কোম্পানির ১৫০-২০০টি ওয়েব সাইট ও অ্যাপস বানিয়েছেন বলে মিথ্যা অপপ্রচার চালাতেন।
তিনি প্রতারণামূলক অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে দীর্ঘ দিন যাবত অগণিত ভুক্তভোগীর নিকট থেকে কমপক্ষে ৫ কোটি টাকা অবৈধভাবে আত্মসাৎ করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষ আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত চাইলে প্রথমে তাদের দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অপকৌশল অবলম্বন করে গ্রাহকদের বিভিন্ন হয়রানির শিকার করতেন। এমনকি তিনি গ্রাহকদের ভয়-ভীতি ও হুমকি দিতেন। তাতেও কাজ না হলে তিনি অফিসের ঠিকানা কাউকে না জানিয়ে পরিবর্তন করে ফেলতেন।
তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।