শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » খেলাধুলা | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » আফগানদের সামনে বাংলাদেশের রানের পাহাড়
আফগানদের সামনে বাংলাদেশের রানের পাহাড়
রানপ্রসবা চট্টগ্রামে চার-ছক্কার ফোয়ারা ছুটবে, ম্যাচ শুরুর আগেই এমন আভাস দিয়েছিলেন টাইগার হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। অধিনায়ক তামিম ইকবালও তাই টস জিতে বাড়তি সুবিধা পেতে ব্যাটিং বেছে নিলেন। যদিও তিনি স্কোরবোর্ডে ২৬০ এর মতো জমা করার আশা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু লিটন দাস আর মুশফিকুর রহিমের প্রত্যাবর্তনের ম্যাচ অধিনায়কের প্রত্যাশার সীমাকেও ছাড়িয়ে গেল। নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৪ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩০৬ রান। চট্টগ্রামের মাটিতে এটিই টিম টাইগার্সের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। সিরিজে টিকে থাকতে হলে সফরকারীদের করতে হবে ৩০৭ রান।
আগের ম্যাচে ৪৫ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর অনবদ্য জুটিতে অবিস্মরণীয় জয়ের পথে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন আফিফ-মিরাজ। আজ রাঙালেন লিটন-মুশফিকরা। শুরুতে তামিম-সাকিব পড়ে যাওয়ার পর ১৮৬ বলে ২০২ রানের দুর্দান্ত পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন দুজনে মিলে।
যদিও ইনিংসের শেষ দিকে দুজনই আফগান পেসার ফরিদ আহমেদের পরপর দুই ডেলিভারিতে সাজঘরে ফেরেন। ২ ছক্কা ও ১৬ চারে ১২৬ বলে ১৩৬ রানের অসাধারণ চোখজুড়ানো ইনিংস খেলেন লিটন দাস। অন্যদিকে, আগের ম্যাচগুলোতে ছন্দহীন থাকা মুশফিক খেললেন ৯ চারে ৯৩ বলে ৮৬ রানের দারুণ এক ইনিংস। এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৩ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করলেন মুশফিক।
লিটন-মুশফিক আউট হওয়ার পর শেষদিকে প্রত্যাশা অনুযায়ী রান করতে পারেনি আগের ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা আফিফ। জীবন পেয়েও শেষ পর্যন্ত ১২ বলে ১৩ রান করেন। মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ছিলেন ৯ বলে ৬ রানে। ফজলহক ফারুকীর করা ইনিংসের ৫০তম ওভারে বাংলাদেশের ব্যাটাররা তুলতে পেরেছে মাত্র ৪ রান। আর তাই ৩৩০ এর মতো হওয়া স্কোর থেমে যায় ৩০৩ রানেই। তবে এ রানেও খুশি থাকার কথা বাংলাদেশের। এখন নিজেদের কাজটা করতে হবে মুস্তাফিজ-শরিফুলদের।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ম্যাচে টিম টাইগার্সের ব্যাটিং অর্ডারে ধস নামানো ফজলহক ফারুকীর করা ইনিংসের প্রথম ওভারটা দেখেশুনেই খেলেন তামিম ইকবাল। প্রথম পাঁচ বল ডট দেওয়ার পর শেষ বলে এক সিঙ্গেল।
ফারুকীর করা ওভারে রান এসেছিল মোটে দুই। তাও অতিরিক্ত খাত থেকে এসেছে একটি রান। তবে দ্বিতীয় ওভারে ফরিদ আহমেদের বদান্যতায় যেন কিছুটা পুষিয়ে গেল। প্রথম বলটিই স্ট্যাম্পের এত বাইরে দিয়ে গেছে যে, উইকেটকিপার রহমানুল্লাহ গুরবাজ বলের নাগালই পাননি। ওভার শুরুর আগেই পাঁচ রান। এরপর দুর্দান্ত একটি চারের মার তামিমের। দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ফেরা তামিমের চিরচেনা এমন শর্ট যেন দেখেও শান্তি।
দ্রুত উইকেট তোলার আসায় এক প্রান্ত থেকে টানা বোলিংয়ে ফারুকী। নিজের ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে পেতে পেতেও লিটনের উইকেটটা পেলেন না। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে করা ফারুকীর প্রথম বলেই খোঁচা মারতে গিয়েছিলেন লিটন। অল্পের জন্য রক্ষা। ব্যাটে লাগলে বিপদ হতে পারত! এরপর চতুর্থ বলে এলবিডব্লিউ আবেদন করে রিভিউ নিয়েও লিটনকে আউট করতে পারেনি আফগানিস্তান। বল লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করেছে।
তিন ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২০। যার মধ্যে অতিরিক্ত খাত থেকেই এসেছে ১২ রান! আগের ম্যাচে ১৮ রানেই চার উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। আজ পাঁচ ওভার শেষে বিনা উইকেটে সংগ্রহ ৩১! ভালো শুরু বলাই চলে।
ইনিংসের সপ্তম ওভারে যেন প্রথম ম্যাচেরই হাইলাইটস। প্রথম ওয়ানডেতে যেভাবে ফারুকীর বলে এলবিডব্লিউ হয়েছিলেন তামিম। আজও হলেন। এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ার পর আম্পায়ার আউটের সিগন্যাল দিয়েছিলেন। কিন্তু তামিম রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারলেন না। ২৪ বলে ২ চারের মারে ১২ রান করে ফিরলেন।
প্রথম ওয়ানডেতে রান পাননি। দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্সের শরণাপন্নও হয়েছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হলো না। দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও দেখেশুনে শুরুর পরও টিকতে পারলেন না। সাজঘরে ফিরলেন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
তামিম আউট হওয়ার ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই বাউন্ডারিতে ফারুকীকে স্বাগত জানান সাকিব। যদিও পরের বলেই পরাস্ত হয়েছিলেন। কিন্তু কোনো বিপর্যয় হয়নি। তবে ব্যক্তিগত ২০ রানের মাথায় রশিদে কাটা পড়েন সাকিব। এরপরই দুর্দান্ত জুটি গড়ে দলকে শক্ত ভীত এনে দেন লিটন-মুশফিক।
আফগানিস্তানের শক্তির জায়গা যে বোলিং ইউনিট, রশিদ-মুজিব কিংবা সেনসেশন ফারুকী আজ সেভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। আফগান বোলাররা ইনিংসজুড়ে ১৮টি ওয়াইড দিয়েছেন। বাংলাদেশের পতন হওয়া চারটি উইকেট তিন বোলার ফরিদ-রশিদ এবং ফজলহক ফারুকী ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।