বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | নারায়ণগঞ্জ | নারায়ণগঞ্জ সদর | শিরোনাম » র্যাবের জালে ধরা পড়লো ভুয়া করোনা টেষ্ট প্রতারক চক্রের ১৪ সদস্য
র্যাবের জালে ধরা পড়লো ভুয়া করোনা টেষ্ট প্রতারক চক্রের ১৪ সদস্য
বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা টেস্ট নেগেটিভ ফলাফল প্রাপ্তির আশ্বাস দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ একটি প্রতারক চক্র। এমন অভিযোগে র্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ এর একাধিক আভিযানিক দল বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতভর কুমিল্লা, নোয়াখালী, ব্রাহ্মনবাড়িয়া ও রাজধানীর ঢাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের ১৪ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।
র্যাব প্রথমে কুমিল্লা জেলা কোতয়ালী থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. জসিম উদ্দিন (২২) ও মো সুলতান মিয়া (১৯) কে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের দেয়া তথ্যমতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও রাজধানী ঢাকার সায়দাবাদ, রমনা ও মতিঝিল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. বেলাল হোসেন (৩১) কে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত বেলাল এর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার মতিঝিল এলাকা হতে চক্রের সক্রিয় সদস্য মো আবুল হোসেন (২৪), মো. আবদুল নুর (২১), মো. আলফাজ মিয়া (১৯) মো. শামিম (৩২) মো. আহাম্মদ হোসেন (১৯) কে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোবাইল সীমের যোগানদাতা মো. ইমরান উদ্দিন মিলন (১৯) কে নোয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তীতে বি-বাড়িয়া জেলায় অভিযান পরিচালনা করে চক্রের অন্যতম হোতা (১০) মো. সবুজ মিয়া(২৭), মো. আব্দুর রশিদ (২৮) আব্দুল করিম চৌধুরী (৩২), মো. আঙ্গুর মিয়া (২৫), এবং মো. আলমগীর হোসেন (২০) কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে আত্মসাৎকৃত ৭ লাখ টাকা, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১২০টি সীমকার্ড, সিম এ্যক্টিভেট করার ১টি ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন, ১টি ট্যাব, ৩২টি মোবাইল, ১টি পাসপোর্ট, নোটবুক এবং চক্রের সদস্যদের বেতনের হিসাব বিবরণী জব্দ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং-এর পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিদেশগামী ব্যক্তিদের টার্গেট করে করোনা টেস্টের ভুয়া পজিটিভ রিপোর্ট এর কথা বলে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছে কয়েকটি চক্র। বেশকিছু ভূক্তভোগী প্রতারক চক্রকে অর্থ প্রদানের পরেও তাদের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসার পরিপ্রেক্ষিতে তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রতারণার বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত হয়।
সাধারণ বিদেশগামী যাত্রী, বিভিন্ন হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ, সিভিল সার্জন অফিস বিভিন্ন সময়ে র্যাবের নিকট এ ধরনের প্রতারণা সংক্রান্ত লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দায়ের করেন। এমন অভিযোগের সত্যতা যাচাই এবং প্রতারকদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে এবং এর সত্যতা পেয়ে অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের ওই ১৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
এ সময় তাদের কাছ থেকে আত্মসাৎকৃত ৭ লাখ টাকা, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১২০টি সীমকার্ড, সিম এ্যক্টিভেট করার ১টি ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন, ১টি ট্যাব, ৩২টি মোবাইল, ১টি পাসপোর্ট, নোটবুক এবং চক্রের সদস্যদের বেতনের হিসাব বিবরণী জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত প্রতারক চক্রের সদস্যরা কেউ প্রাথমিক শিক্ষার গন্ডি পার হয়নি। তথাপি অত্যন্ত নিখুঁতভাবে সুকৌশলে শত শত মোবাইল সিম নামে-বেনামে উত্তোলন করে প্রতারণা করে আসছে। মো. সবুজ মিয়া জানায় প্রতারণার মাধ্যমে, গত ১০ মাসে সে প্রায় হাজারের অধিক বিদেশগামী যাত্রীর নিকট হতে জনপ্রতি ১০/১৫ হাজার করে প্রায় এক কোটি টাকা আয় করেছে এবং ওই টাকা দিয়ে সে তার গ্রামের বাড়িতে একটি অট্টালিকা তৈরি করেছে।
অন্যদিকে কাজী মো. বেলাল হোসেন এই অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ৬ শতাধিক বিদেশগামী যাত্রীদের নিকট হতে জনপ্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার করে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আয় করে। বাকি সদস্যরা এই প্রতারণার মাধ্যমে প্রতি মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।