বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | জাতীয় | ঢাকা | শিরোনাম » রিসাইকেলড ফাইবার আমদানি শুল্ক-কর মুক্ত রাখার প্রস্তাব বিটিএমএ’র
রিসাইকেলড ফাইবার আমদানি শুল্ক-কর মুক্ত রাখার প্রস্তাব বিটিএমএ’র
রিসাইকেলড ফাইবার আমদানিতে শুল্ক-কর মুক্ত সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ)।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রাক বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে সংগঠনটি এই প্রস্তাবনা দেয়।
প্রাক বাজেট আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। এসময় এনবিআর সদস্য (কাস্টমস নীতি) মো. মাসুদ সাদিক, সদস্য (ভ্যাট নীতি) জাকিয়া সুলতানা ও সদস্য (আয়কর নীতি) সামস উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় বিটিএমইএ এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) প্রতিনিধিরা অংশ গ্রহণ করে।
বিটিএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ‘বিশ্ব বাজারে ম্যান মেড ফাইবার দিয়ে তৈরি পোশাকের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। একই সঙ্গে রিসাইকেলড ফাইবারেও ব্যবহার বাড়ছে। রিসাইকেলড ফাইবার দিয়ে তৈরি সূতায় পোশাক অত্যন্ত আরামদায়ক, ফ্যাশনেবল, বৈচিত্রময় ও তুলনামূলক মূল্য সাশ্রয়ী। ফলে দেশি-বিদেশি ক্রেতার নিকট এই ধরনের পোশাক সমাদৃত। এই ধরনের পোশাকের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। ভবিষ্যতে এর সম্ভাবনা রয়েছে। তাই রিসাইকেলড ফাইবার আমদানিতে শুল্ক-কর মুক্ত সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করছি।’
তিনি বলেন, ‘সকল প্রকার সূতার ওপর স্থানীয় বাজারে বিক্রয় পর্যায়ে প্রতি কেজিতে ৩ টাকা মূল্য সংযোজন কর ধার্য করার প্রস্তাব করছি। বিদ্যমান নিয়মানুযায়ী প্রতি কেজিতে ছয় টাকা কর দিতে হয়। এছাড়া টেক্সটাইল মিলে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ ভিন্ন ভিন্ন ম্যানুফ্যাকচারার্সের তৈরি। যদি একই ম্যানুফ্যাকচারার্সের নিকট হতে মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ আমদানি করা হয় তাহলে ক্যাপিটাল মেশিনারিজের মতো ১ শতাংশ শুল্ক দিয়ে আমদানির সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বস্ত্র উৎপাদনের সাথে জড়িত শিল্প প্রতিষ্ঠানের আয়কর হার আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত ১৫ শতাংশ বহার রাখার প্রস্তাব করছি। এছাড়া কাঁচামাল আমদানি পর্যায়ের বিদ্যমান অগ্রিম কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার দাবি জানাই।’
বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘রপ্তানির বিপরীতে প্রদত্ত নগদ সহায়তার ওপরে আয়কর কর্তনের হার ১০ শতাংশ থেকে হ্রাস করে শূন্য শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি। এছাড়া তৈরি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে মূল্যায়নের সময় কর আরোপকালে অগ্রহণযোগ্য খরচ ও অন্যান্য আয়ের ক্ষেত্রে কর্পোরেট ট্যাক্স হার ১২ শতাংশ এবং গ্রিন কারখানার জন্য ১০ শতাংশ হারে কর আরোপ করার প্রস্তাব করছি।’
তিনি বলেন, ‘কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোট জনবলের ন্যূনতম ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগ করলে প্রদেয় করের ৫ শতাংশ রেয়াত প্রদানের বিধান রয়েছে। কিন্তু এত কর্ম উপযোগী প্রতিবন্ধী ব্যক্তি নিয়োগ দেওয়ার জন্য পাওয়া যায় না। তাই কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোট জনবলের ন্যূনতম ১ শতাংশ, ২ শতাংশ, ৩ শতাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগ করলে ওই করদাতাকে প্রদেয় করের যথাক্রমে ২, ৩ ও ৪ শতাংশ কর রেয়াতের সুবিধা দেওয়ার দাবি জানাই।’
বিকেএমইএ প্রস্তাবনায় শতভাগ রপ্তানীমুখী পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে শুন্য ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে রপ্তানিমুখি তৈরি পোশাক শিল্পের রপ্তানি ও উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে শতভাগ ভ্যাট অব্যাহতি দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ব্যাক-টু-ব্যাক ঋণপত্র খোলার জন্য রপ্তানিকারক ও প্রচ্ছন্নকারকের বন্ডেড ওয়্যারহাউজ বা স্পেশাল বন্ডেড ওয়্যার হাউজ থাকার বাধ্যবাধকতা রহিত করে সংশ্লিষ্ট বিধির প্রয়োজনীয় সংশোধন করার, শতভাগ রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য উৎস আয়করকে চূড়ান্ত উৎস কর দায় হিসাবে আগামী ৫ অর্থবছরের জন্য যৌক্তিক হারে নির্ধারণ করা;
মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানীতে বিভাগীয় ভ্যাট অফিস থেকে প্রত্যয়ন পত্র নেওয়ার বিধান রোহিত করার, সকল অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ বিকল বা নষ্ট হলে অগ্নি নির্বাপক দরজার ন্যায় একই শর্তে প্রতিস্থাপনের জন্য রেয়াতি হারে শুল্কায়নের মাধ্যমে আমদানির সুবিধা প্রদান করা;
একই সঙ্গে রপ্তানির বৃহত্তর স্বার্থে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেজিং সিস্টেমের আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে হ্রাস করে মূলধনী যন্ত্রপাতির ন্যায় রেয়াতি হারে শুল্কায়ন করা, অনুর্ধ্ব ১০ কেজি ক্যাপাসিটির ওয়াশিং ও ড্রাই মেশিন আমদানিকালে মূলধনী যন্ত্রপাতির ন্যায় রেয়াতি হারে শুল্কায়নের সুযোগ প্রদান করা, বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ প্লান্ট স্থাপনের জন্য আমদানীকৃত রাসায়নিকের শুল্ক ও মূসক শূন্য শতাংশ রাখার সুপারিশ করেছে বিকেএমইএ।