রবিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » খেলাধুলা | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » এক এজাজ প্যাটেলেই হারলো বাংলাদেশ
এক এজাজ প্যাটেলেই হারলো বাংলাদেশ
টানা তৃতীয় সিরিজ জয়ের চ্যালেঞ্জ নিতে পারেনি বাংলাদেশ। ৭৬ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ড ম্যাচ জিতে নেয় ৫২ রানে। দেশের মাটিতে টি-টোয়েন্টিতে এটাই সর্বনিম্ন স্কোর বাংলাদেশের। সব মিলিয়েই এটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। এ বছরের শুরুতেই ১০ ওভারে পরিণত হওয়া অকল্যান্ডের টি-টোয়েন্টিতেও ৭৬ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ।
আজ নিউজিল্যান্ডের সামনে টাইগার ব্যাটসম্যানদের হতচ্ছাড়া ব্যাটিংয়ে দাপট দেখিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের স্পিনার এজাজ প্যাটেল। বাংলাদেশের বিপক্ষে বাঁহাতি স্পিনারের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড এখন তার। ৪ ওভার বল করে ১৬ রানের বিনিময়ে তিনি শিকার করেন চারটি মূল্যবান উইকেট। তার ঘূর্ণিতে পরাস্থ হয়েছেন মেহেদী, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ ও আফিফ।
টাইগারদের লজ্জার দিনে সিরিজে টিকে থাকল সফরকারী কিউইরা। পাঁচ ম্যাচের সিরিজের তিন ম্যাচ শেষে ২-১ এ ব্যবধান কমালো ব্লাকক্যাপসরা। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড সংগ্রহ করে ৫ উইকেটে ১২৮। জবাবে দুই বল বাকি থাকতেই ৭৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
১২৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আক্রমণাত্মক শুরু করেন দুই স্বাগতিক ওপেনার লিটন দাস ও নাঈম শেখ। ম্যাকনকির করা তৃতীয় ওভারে দুটি বাউন্ডারি হাঁকানোর দুই বল পর আবারও স্ট্রোক খেলতে গিয়ে আউট হন লিটন দাস। ১৫ রান করে এলবিডব্লিউ হন বাংলাদেশের ওপেনার।
লিটনের বিদায়ের পর তিন নম্বরে ব্যাট করতে আসেন মেহেদী। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। ৪ বলে ১ রান করে হেনরি নিকোলসের ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফিরেন। সাকিব ক্রিজে এসে শুরু থেকেই শট খেলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। প্যাটেলকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তিনি।
আজ শুরু থেকেই অস্বস্তিতে নাঈম। আগের ওভারে জীবন পেলেও রাচিনের বলে আর পারলেন না। রাচিনকে মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি। ১৯ বলে ১৩ রান করেন নাঈম। ইনিংসে দুটি চার ছিল তার।
নিজের শততম ম্যাচ খেলতে নেমেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্যাটেলের বলে কাভার দিয়ে মারতে গিয়ে নিকোলসের তালুবন্দী হন বাংলাদেশের অধিনায়ক। ৭ বলে ৩ রান তুলেন মাহমুদউল্লাহ। অধিনায়কের আউটের ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই বিদায় নেন আফিফ হোসেন। এজাজ প্যাটেলের ঘূর্ণীতে কাবু হন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
দলীয় ৫৭ রানে ম্যাকনকির বলে তুলে মারতে গিয়ে ফিরে যান সোহান। বাউন্ডারি মারার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু ব্ল্যান্ডালের দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হন সোহান। তার আউটে আরও বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। তার আগে নামের পাশে যোগ করেন ১১ বলে ৮ রান।
এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। মুশফিক শেষ পর্যন্ত একা লড়াই করে ম্যাচটা নেন শেষ ওভার পর্যন্ত। মুশফিক ২০ রানে অপরাজিত থাকলেও ৫২ রানে হেরে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ৭৬ রানের লজ্জা পেতে হলো বাংলাদেশকে।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ১৭ রানে ৪ উইকেট নেন এজাজ প্যাটেল। ৩ উইকেট নেন কোল ম্যাককনিক এবং ১টি করে উইকেট নেন রাচীন রবীন্দ্র, স্কট কুগ্লেইন ও গ্রান্ডহোম।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমেই আক্রমণাত্মক খেলে সফরকারীরা। প্রথম দুই ওভারে ১৬ রান তুলে নিউজিল্যান্ড। আগের দুই ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও স্পিন দিয়ে আক্রমণ শুরু করে বাংলাদেশ। তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে পরিবর্তন এনে মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে বল তুলে দেন মাহমুদউল্লাহ। নিজের প্রথম ওভারে বোলিংয়ে এসেই বিপজ্জনক হয়ে উঠা ফিন অ্যালেনকে ফিরিয়ে উইকেট মেডেন দেন মোস্তাফিজ। ১০ বলে ১৫ করেন ফিন।
এক উইকেট হারানোর পর জমে উঠেছিল উইল ইয়াং ও রাচিন রবীন্দ্র জুটি। তবে সাইফউদ্দিনের অসাধারণ এক ডেলিভারিতে ভাঙে দুজনের ৩০ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। এলবিতে সাইফউদ্দিন ফেরান ২০ রান করা ইয়াংকে। ইয়াংকে আউট করার দুই বল পরই কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে আউট করেন সাইফউদ্দিন। ইয়াংয়ের মতো গ্র্যান্ডহোমকেও স্লোয়ারে পরাস্ত করেন এই পেসার।
দশম ওভারে মাহমুদউল্লাহর ওপর চড়াও হন রাচিন রবীন্দ্র। নিজের শততম টি-টোয়েন্টিতে রাচিনকে ফিরিয়ে মাইলফলক ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখেন মাহমুদউল্লাহ। ২০ রান আসে রবীন্দ্রর ব্যাট থেকে। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা টম ল্যাথাম এবার বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ফিরতি ক্যাচ নিয়ে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ককে দ্রুত ফেরান মেহেদী হাসান। ৯ বলে তিনি করেন ৫।
দ্রুত পাঁচ উইকেট হারানোর পর টম ব্ল্যান্ডেল আর হেনরি নিকোলসের ব্যাটে লড়া করে নিউজিল্যান্ড। সেখান থেকে অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে ১২৮ রানের সংগ্রহ গড়েন হেনরি-ব্লান্ডলরা। ৬৬ রানের জুটিতে ২৯ বলে ৩৬ রান নিয়ে নিকোলাস ও ৩০ বলে ৩০ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন টম ব্ল্যান্ডেল।
বাংলাদেশের হয়ে ২ উইকেট নেন সাইফউদ্দিন। একটি করে উইকেট শিকার করেন মেহেদী, মোস্তাফিজ ও মাহমুদউল্লাহ।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের সফল অধিনায়ক হবার পর আরো একটি মাইলফলক স্পর্শ করলেন টাইগারদের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আজ মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে খেলতে নেমেই প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে একশ ম্যাচ খেলার নজির গড়লেন মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশের প্রথম এবং বিশ্বের অষ্টম ক্রিকেটার হিসাবে ১০০ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার মাইলফলক স্পর্শ করলেন তিনি।