শনিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | মানিকগঞ্জ | শিরোনাম » মানিকগঞ্জে জিনের বাদশার প্রতারণার ফাঁদে, তিন নারী সর্বস্বান্ত
মানিকগঞ্জে জিনের বাদশার প্রতারণার ফাঁদে, তিন নারী সর্বস্বান্ত
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে কথিত জিনের বাদশার প্রতারণায় নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার খুইয়েছেন তিন নারী। স্বর্ণের মূর্তি পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে এই মালামাল হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্রটি।
সিংগাইর উপজেলার সায়েস্তা ইউনিয়নের নীলটেক গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীরা হলেন, ওই গ্রামের ওমর আলীর মেয়ে নুরজাহান (২৪), তার মামাতো বোন পায়েল আক্তার (১৪) ও খালা সুফিয়া বেগম (৫০)।
এ ঘটনায় সিংগাইর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। তবে পুলিশ এখনো কোনো অপরাধীকে শনাক্ত করতে পারেনি।
প্রতারণার শিকার নূরজাহান আক্তার জানান, গত ৩ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে হঠাৎ তার মামাতো বোন পায়েলের কাছে প্রথমে একটা ফোন আসে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে নিজেকে জিনের বাদশা পরিচয় দেয়। এরপর বিভিন্ন সুরা ও ইসলামিক কথা বলে তার মন দুর্বল করে। নানা লোভ লালসা দেখানো হয়।
কথিত জিনের বাদশা জানায়, ‘নীলটেক ব্রিজের উত্তর পাশে একটি স্বর্ণের মূর্তি আছে। সেটা সংগ্রহ করো।’
পায়েল মূর্তিটি সংগ্রহ করে বাড়িতে নিয়ে আসে। একইভাবে আরও লোভ দেখিয়ে তার কাছ থেকে ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ৬ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন হাতিয়ে নেয়।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে প্রবাসীর স্ত্রী নূরজাহান আক্তারকেও জিনের বাদশা পরিচয়ে ফোন করা হয়। কথিত ওই জিনের বাদশা তার সঙ্গে সুমধুর কণ্ঠে কথা বলেন। তাকে বিভিন্ন সুরা পাঠ করান। নানা লোভ লালসা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বলেন, তার অনেক বিপদ। এই বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে হলে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে হবে। বিষয়টি কাউকে জানালে তার একমাত্র সন্তানের মৃত্যু হবে। নূরজাহান ভয়ে এক আত্মীয়ের কাছ থেকে ধার করে দুই দফায় দুটি বিকাশ নম্বরে ৪০ হাজার টাকা পাঠান। পরবর্তীতে ওই ফোন দুটি বন্ধ পাওয়া যায়।
নূরজাহান আরও জানান, একইভাবে তার খালা সুফিয়া বেগমেরও ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার হতিয়ে নিয়েছে জিনের বাদশা পরিচয় দেওয়া প্রতারক। জিনের বাদশার নির্দেশমতো পায়েল আক্তারের সংগ্রহ করা মূর্তিটি সীসার তৈরি। ওপরে স্বর্ণের মতো রং দেওয়া।
এ ব্যাপারে নূরজাহান বেগম বাদী হয়ে সিংগাইর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রেজাউল হক জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।