শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » হুমকির মুখে আফগান সাংবাদিকরা
হুমকির মুখে আফগান সাংবাদিকরা
ভয়াবহ সংকটে আফগানিস্তানের মিডিয়া জগৎ। তালেবানের বিধিনিষেধের কারণে হুমকির মুখে সাংবাদিকরা। বিশেষ করে নারী গণমাধ্যমকর্মীদের অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ। তালেবানের নিয়ম না মানায় অপহরণ ও গুমের শিকার হয়েছেন অনেকে।
গত আগস্টে তালেবান সরকার ক্ষমতা দখলের পর ব্যাপক চাপের মুখে পড়ে দেশটির গণমাধ্যম। একে একে বন্ধ হতে থাকে সংবাদ প্রচার। রাজনৈতিক চাপ ও অর্থনৈতিক সংকটে টেলিভিশন ও পত্রিকা চালাতে হিমশিম অবস্থা মালিকদের।
কিছু সংবাদ মাধ্যম খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চললেও এবার দেশটির সাংবাদিকদের ওপর নেমে এসেছে নির্যাতনের খড়গ। সংবাদ প্রচারে বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করছে তালেবান।
সংবাদ মাধ্যমে নারীদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে গোষ্ঠীটি। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে গুমের শিকার হচ্ছেন অনেক নারী সাংবাদিক। তালেবানের বিরুদ্ধে এরইমধ্যে বেশ কয়েকজন নারী সাংবাদিককে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আফগানিস্তান সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজের রিপোর্টার বানাফসা বিনেস বলেন, কঠিন চাপের মুখে আমাদের সংবাদ সংগ্রহ করতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত নারী সাংবাদিকরা হুমকি পাচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে কোনো না কোনো সাংবাদিক গ্রেফতার হচ্ছেন। আফগানিস্তানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ২০ বছরে এসে এমনটা প্রত্যাশা করিনি আমরা। সংবাদ প্রচারেও রয়েছে নানা বিধিনিষেধ।
টোলো নিউজের পরিচালক খোপোল সাপাই বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা যদি এখানে স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারে। তাহলে তারা আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে বাধ্য হবে। নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষায় তালেবানকে আরও উদার হতে হবে। না হলে তারা আন্তর্জাতিকভাবে আরও চাপের মুখে পড়বে। আশা করি, এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে।
নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা জানিয়ে আফগান সাংবাদিকরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে তালেবান শাসনামলে আফগানিস্তানের সঠিক চিত্র উঠে আসবে না। লঙ্ঘিত হবে মানবাধিকার। আফগানিস্তান সম্পর্কে অন্ধকারে থাকবে বিশ্ব।
তবে সাংবাদিকের এই অভিযোগ মানতে নারাজ তালেবান সরকার। গোষ্ঠীটির এক মুখপাত্র জানান, সংবাদ প্রচারে কোনো বাধা দেয়া হচ্ছে না। বরং দেশের উন্নয়নে গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকা আশা করে তালেবান।
আফগানিস্তান সংস্কৃতি ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপমুখপাত্র বিলাল কারিমি বলেন, ইসলামিক আমিরাত সরকার সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করে। আমরা গণমাধ্যমের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে চাই, আফগানিস্তানের সংবাদ মাধ্যমের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো হুমকি কিংবা বিধিনিষেধ নেই। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করছে।
বার্তা সংস্থা এপি বলছে, তালেবান ক্ষমতা দখলের পর দেশটির ৪০ শতাংশ সংবাদ মাধ্যম বন্ধ হয়ে গেছে। কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার অপেক্ষায় আরও অনেক প্রতিষ্ঠান।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারের তথ্য বলছে, তালেবানের শাসনের আগে আফগানিস্তানে প্রায় সাড়ে ৫০০ সংবাদমাধ্যম চালু থাকলেও এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ২৩১টি। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন প্রায় সাড়ে ছয় হাজার সাংবাদিক। দেশটির জনপ্রিয় টেলিভিশন টোলো নিউজ চালু থাকলেও সব নারী সাংবাদিককে ছাঁটাই করা হয়েছে।