বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী | জাতীয় | ঢাকা | শিরোনাম » দেশে অবস্থানরত বিদেশিদের কোন হিসেব নেই: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী
দেশে অবস্থানরত বিদেশিদের কোন হিসেব নেই: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী
অনেকে বলেন বাংলাদেশে কাজ করে বিদেশিরা বছরে ৫ থেকে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করছেন। তবে তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। দেশ থেকে কত লোক বাইরে থেকে আসছেন তার কোন হিসাব নেই বলে জানান পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ড. শামসুল আলম।
বৃহস্পতিবার(১০ ফেব্রুয়ারি) নগরীরর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মিলনায়তনে জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (এনপিআর) বিষয়ক কর্মশালায় অংশ নিয়ে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (এনপিআর) প্রণয়ন করতে যাচ্ছি। এটা করতে পারলে সকল হিসাব আমাদের কাছে থাকবে। বাংলাদেশে কি পরিমাণ বিদেশি শ্রমিক কাজ করছেন কত টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে সকল হিসাব থাকবে এনপিআর এর মাধ্যমে। এনপিআর প্রণয়ন করতে পারলে আমাদের বিশ্বের বুকে আমাদের নাগরিক মর্যাদা বাড়বে। দেশে প্রতারণা করে কেউ রেহায় পাবে না। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে এনপিআর দারুণ ভূমিকা রাখবে। অনেক প্রতারণা বন্ধ হবে।’
তিনি বলেন, আমরা দেখি ভূমি নিয়ে নানা ধরণের জটিলতা থাকে তবে এনপিআর হলে এই সমস্যা থাকবে না। কারণ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একজন নাগরিকের সকল তথ্য থাকবে এনপিআর-এ। তবে আমার একটাই ইচ্ছা এনপিআর যেন সময় মতো সম্পূর্ণ হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন. এনপিআর আমাদের ব্যক্তি সমাজে দারুণ ভূমিকা রাখবে। ভারতীয় নাগরিকের সব তথ্য থাকে আধার কার্ডে। ভারতের আধার কার্ডের চেয়েও শক্তিশালী নাগরিক ডাটাবেজ তৈরি করতে যাচ্ছে বিবিএস। তবে ভারত যেহেতু আধার কার্ড নাম দিয়েছে আমরা অন্য একটা নাম দেব। বর্তমানে পলিসি লেবেলে এনপিআরের কাজ চলছে। এনপিআরে একজন নাগরিকের ৩৩ ধরনের তথ্য থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, জনশুমারি নিয়ে আমরা সমস্যায় আছি। নানা কারণে এটা সময় মতো করতে পারলাম না। কোভিড-১৯ ছাড়াও নানা বিষয় দায়ী তবে এনপিআর যেন তাড়াতাড়ি হয় সেই দাবি থাকবে। আমাদের একটা আলাদা পরিচয় দরকার। যাতে করে প্রত্যেকের নানা ধরণের তথ্য থাকে।
বিবিএস জানায়, এনপিআর ৩৩ ধরণের তথ্য থাকবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো— ব্যক্তির নাম, এনআইডি-পাসপোর্ট-জন্ম নিবন্ধন-মোবাইল নম্বর, ইমেইল আইডি, জরুরি নম্বর, পিতা-মাতার নাম, স্ত্রী/স্বামীর নাম, বসতবাড়ি, জন্ম তারিখ, লিঙ্গ, বৈবাহিক অবস্থা, জন্মস্থান, জাতীয়তা, ধর্ম, ব্লাড গ্রুপ, রেসিডেন্স স্ট্যাটাস, বর্তমান ঠিকানা, ঘরের ধরন, পানির উৎস/স্যানিটেশন/আলোর উৎস, স্থায়ী ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, নাগরিকত্ব, কান্ট্রি মাইগ্রেশন, করোনিক ডিজিস, জেনেটিক ডিজিস প্রভৃতি। একজন নাগরিকের জন্ম থেকে শুরু মৃত্যু পর্যন্ত সব ধরনের তথ্য থাকবে। এই তথ্য ভোটারের জন্য নির্বাচন কমিশনও ব্যবহার করতে পারবে। মানুষের মৃত্যু হলেও হাজার বছর তার তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।
বিবিএসের সেন্সাং উইংয়ের সাবেক পরিচালক ও এনপিআর-এর পরামর্শক ড. মোহাম্মদ সাহাদাত হোসেন কর্মশালায় বলেন, ভারতের আধার কার্ডের থেকেও শক্তিশালী হবে এনপিআর। মানুষ মারা যাবে কিন্তু ডাটা সংগ্রহ থাকবে হাজার বছর। একটি শিশু জন্মের পরেই এনপিআর ডাটাবেজে চলে আসবে। নাগরিকের যখন তথ্য দরকার হবে তখন এক ক্লিকেই সব তথ্য বের হয়ে যাবে।
এনপিআর থেকে পাওয়া যাবে দেশের নাগরিকের সব তথ্য। এ লক্ষ্যে প্রত্যেক নাগরিকের ব্যক্তিগত রেজিস্ট্রার (ডাটাবেইজ) তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। ডাটাবেজ তৈরির জন্য ‘ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্ট্রার’ সংক্রান্ত প্রকল্প অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করছে সংস্থাটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দেওয়ার পরেই বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে বিবিএস।